খেলাধুলা ডেস্ক: চলমান বিপিএলের ২৪তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস এবং মাশরাফি বিন মর্তুজার রংপুর রাইডার্স। শেষ বলের রোমাঞ্চকর নাটকের ম্যাচে ঢাকাকে ৩ রানে হারিয়েছে রংপুর।
টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ডায়নামাইটস দলপতি সাকিব। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে মাঠের লড়াইয়ে সন্ধ্যা ৬টায় নামে দুই দল। ব্যাট হাতে ঝড় তুলে হাফ-সেঞ্চুরি করেন রংপুরের ওপেনার ক্রিস গেইল। আর বল হাতে ঢাকার দলপতি সাকিব তুলে নেন ৫টি উইকেট। টস হেরে ব্যাট করা রংপুর ১৯.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে তোলে ১৪২ রান। জবাবে, ঢাকা ডায়নামাইটস ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে তোলে ১৩৯ রান।
এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে শেষ হলো ঢাকা-১ পর্ব। সিলেট পর্বের পর এই পর্ব শুরু হয়। এরপর বিপিএল যাবে চিটাগংয়ে। বন্দরনগরী ছেড়ে আবারো বিপিএল ফিরবে ঢাকায়।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) মিরপুরে রংপুরের ব্যাটিং উদ্বোধন করেন ক্রিস গেইল আর ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। টানা দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাটে ঝড় তুলে হাফ-সেঞ্চুরি করেন গেইল। ম্যাককালাম ব্যক্তিগত ৬ রান করে আফ্রিদির বলে বোল্ড হলেও ঢাকার বোলারদের স্বস্তিতে থাকতে দেননি আবু হায়দার রনির হাত ফসকে জীবন পাওয়া গেইল। ২৮ বলে ৫টি চার আর চারটি ছক্কায় করেন ৫১ রান। মোসাদ্দেক হোসেনের বলে সেই রনির হাতেই ধরা পড়েন ক্যারিবীয়ান ব্যাটিং দানব।
তিন নম্বরে নামা মোহাম্মদ মিঠুন ২৬ বলে করেন ২২ রান। শাহরিয়ার নাফিসের ব্যাট থেকে আসে ৯ রান। কিছুটা উপরে ব্যাটিংয়ে এসে রংপুর দলপতি মাশরাফি ১১ বলে একটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ১৫ রান। ৯ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৫ রান করে বিদায় নেন থিসারা পেরেরা। আর কেউ বলার মতো রান করতে পারেননি।
ঢাকার পাকিস্তানি স্পিনার আফ্রিদি ৪ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। দলপতি সাকিব ৩.৫ ওভারে ১৬ রানের বিনিময়ে নেন ৫ উইকেট। পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমির ৪ ওভারে ৩৪ রানের বিনিময়ে নেন ১ উইকেট। মোসাদ্দেক হোসেন ১ ওভারে ৪ রানের বিনিময়ে নেন ১ উইকেট। ক্যারিবীয়ান তারকা স্পিনার সুনিল নারাইন ৪ ওভারে ২৯ রানের বিনিময়ে কোনো উইকেট পাননি। আবু হায়দার রনি ২ ওভারে ৯ রানের বিনিময়ে কোনো উইকেট পাননি। কাইরন পোলার্ড ১ ওভারে ৬ রানের বিনিময়ে উইকেট শূন্য থাকেন।
১৪৩ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকার ওপেনার এভিন লুইস করেন ২৫ বলে ২৮ রান। আরেক ওপেনার সুনীল নারাইন ০ রানে সাজঘরে ফেরেন। তিন নম্বরে নামা সাকিব ১১ বলে করেন ১১ রান। মোসাদ্দেকের ব্যাট থেকে আসে ২ রান।
মেহেদি মারুফ ২৪ বলে ১৫ রান করে বিদায় নেন। কাইরন পোলার্ড ১৪ বলে ১২ এবং নাদিফ চৌধুরি ২ রান করে বিদায় নেন। অতিরিক্ত থেকে আসে ১৯ রান। শেষ ওভারের শেষ দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন রংপুরের পেসার থিসারা পেরেরা। ঢাকার ইনিংস থামে ১৩৯ রানের মাথায়।
রংপুরের দলপতি মাশরাফি ৪ ওভার বল করে ৩০ রান খরচায় তুলে নেন দুটি উইকেট। সোহাগ গাজী ৪ ওভারে ১৮ রান করে নেন দুটি উইকেট। রুবেল হোসেনের ৪ ওভার থেকে ২৯ রান আসলেও তিনি তুলে নেন দুটি উইকেট। লাসিথ মালিঙ্গা ৪ ওভারে ২০ রান খরচ করে তুলে নেন একটি উইকেট। আর থিসারা পেরেরা ৪ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন।
দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল রাজশাহী কিংস ও খুলনা টাইটান্স। ২৩তম ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা। ড্যারেন স্যামি-মুশফিকদের রাজশাহীকে ২ উইকেটে হারিয়েছে টাইটান্স। নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে রাজশাহী ১৬৭ রানের টার্গেট দেয় খুলনাকে। জবাবে, ৪ বল বাকি থাকতে জয় তুলে নেয় খুলনা।
রাজশাহীর মুশফিক এবং ডোয়াইন স্মিথ হাফ-সেঞ্চুরি করেন। খুলনার পাকিস্তানি পেসার জুনাইদ খান ৪ ওভারে ২৭ রান খরচায় একাই তুলে নেন চারটি উইকেট। খুলনার দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দলের হাল ধরে ৪৪ বলে ৮টি চার আর একটি ছক্কায় ৫৬ রান করে বিদায় নিলেও রাজশাহীর মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে নিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন আরিফুল হক। আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯ বলে ৪টি চার আর দুটি ছক্কায় ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন আরিফুল হক। ১৯.২ ওভারে জয় তুলে নেয় খুলনা।
রংপুর রাইডার্স: ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, ক্রিস গেইল, শাহরিয়ার নাফিস, মোহাম্মদ মিঠুন (উইকেটকিপার), রবি বোপারা, থিসারা পেরেরা, জিয়াউর রহমান, মাশরাফি (অধিনায়ক), সোহাগ গাজী, রুবেল হোসেন, লাসিথ মালিঙ্গা।
ঢাকা ডায়নামাইটস: এভিন লুইস, শহীদ আফ্রিদি, মেহেদি মারুফ, নাদিফ চৌধুরি, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), জহুরুল ইসলাম, কাইরন পোলার্ড, মোসাদ্দেক হোসেন, সুনিল নারাইন, আবু হায়দার রনি, মোহাম্মদ আমির।