আজকের প্রভাত রিপোর্ট: শিগগিরই গঠিত হচ্ছে গণমাধ্যম কমিশন। আগামী সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা হবে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের উদ্যোগে সংবাদপত্রের প্রকাশক, সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদকসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
ডিএফপির মহাপরিচালক আবুল কালাম শামসুদ্দিনের সভাপতিত্বে তথ্য ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম। সভায় ঢাকা ও বাইরের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাত শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তব্য দেন মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নয়া দিগন্তের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সালাহ উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, আজকের পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান, ডেইলি সানের সম্পাদক রেজাউল করীম লোটাস, প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম গোরা, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ, সংগ্রামের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নূরুল আমিন, ইত্তেফাকের বার্তা সম্পাদক অশোক কুমার সিনহা, সংবাদের প্রধান প্রতিবেদক সালাম জুবায়ের, ঢাকা মেইলের হেড অব নিউজ হারুন জামিল, ইনকিলাবের ফাহিমা বাহাউদ্দিন শামা, ডেইলি স্টারের মিজানুর রহমান, আজাদীর ওয়াহিদ মালিক, জাগরণের মহিউদ্দিন লিটন, নওরোজ সম্পাদক শামসুল হক দুররানী, জাহাঙ্গীর হোসেন মঞ্জু প্রমুখ।
সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, এই আন্দোলনে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে কিছু গণমাধ্যমকর্মী ফ্যাসিবাদের পক্ষে ছিলেন। যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি অবিচার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, কোনও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যদি মিথ্যা মামলা হয়ে থাকে, তাহলে তা প্রত্যাহার করা হবে। পরিবর্তিত এই প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে কাজে লাগিয়ে কেউ যেন ফ্যাসিবাদের পক্ষে কথা না বলেন, সে বিষয়ে তিনি সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর বলেন, ক্রোড়পত্রের বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রবীণ সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, দলীয় সাংবাদিকের পরিচয় থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। সংবাদপত্রের সংস্কারের জন্য কমিশনের কোনো বিকল্প নেই।
সভাপতির বক্তৃতায় চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মিডিয়া তালিকাভুক্তি, সংবাদপত্রের নিরীক্ষা, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান সমস্যা উল্লেখ করেন এবং সমস্যা থেকে উত্তরণে করণীয় বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ক্রোড়পত্র খাতে ৭৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংবাদপত্রের প্রকাশক, সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদকরা প্রচার সংখ্যা নির্ধারণ, সংবাদপত্রের নিরীক্ষা, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন অসংগতির কথা উল্লেখ করেন। তারা সংবাদপত্রগুলোকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় আনার জন্য মিডিয়া কমিশন গঠনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। মতবিনিময় সভায় সাত শতাধিক পত্রিকার সংবাদপত্রের প্রকাশক, সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদকসহ অন্যান্য অংশীজন উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভা শেষে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট পরিদর্শন করেন।