শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ পৌষ, ১৪৩১

লন্ডনে বসে হুকুম দেয়, এখান থেকে আগুন দেয়: শেখ হাসিনা

editor
ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩ ৮:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজকের প্রভাত ডেস্ক: বিএনপি আন্দোলনের নাম মানুষ পোড়ায় এবং মৃত্যুর ফাঁদ পেতে মানুষ হত্যা করে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, লন্ডনে বসে হুকুম দেয়। ওখান থেকে হুকুম দেয়, আর এখান থেকে আগুন দেয়। হুকুমে যারা আগুন দেয় তারা কী মনে করে? এই আগুন নিয়ে খেলা! এই খেলা ভালো না। বাংলাদেশের মানুষ কখনও এটা মেনে নেবে না। দেশের মানুষকে আহŸান জানাবো অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সকলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ওরা হরতাল দিয়ে লুকিয়ে থাকে। ঘরে বসে থাকে। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে। ওই টাকা পায় কোথায়? জনগণের সমস্ত টাকা মানি-লন্ডারিং করে বাইরে নিয়ে গেছে। জানি না বিএনপির নেতারা কী করে। তাদের একজন বলেছিল, আমরা যখন পল্টনে তারেক কেন লন্ডনে?
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাঙালিকে কেউ দাবায় রাখতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ শত প্রতিক‚লতার মধ্যেও কিন্তু এগিয়ে চলে। আওয়ামী লীগের ওপর যতই আঘাত আসুক তারা জগনের হয়ে লড়াই করে। জনগনের ভোটের ও ভাতের অধিকার অর্জন করে।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেছেন, ওই দলের তো মাথা নেই। একটা ধড় চলছে আরকি। সেটাও একটা হচ্ছে গুলশান, আরেকটি হচ্ছে পল্টন থেকে।
বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র বদলায়নি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদের চরিত্র কখনও বদলাবে না। জনগনের কথা এরা কখনও চিন্তা করে না। নিজেদেরটাই ভালো বোঝে। ওদের বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বাস করবে কীভাবে? ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে। ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে জ্বালাও পোড়াও শুরু করে। মানুষকে পুড়িয়ে মারা, হত্যা করাই তাদের আন্দোলন। জীবন্ত মানুষের গায়ে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের এই অগ্নি-সংন্ত্রাসের শিকার কত মানুষ। অনেকে যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছে। কত পরিবার আপনজন হারিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছে। নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল পারেনি। জনগণ পাশে থাকলে পারা যায় না।
দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে তারা কিছু করেনি- এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, অবাক লাগে বিএনপি যখন গণতন্ত্রের আর জনগণের ভোটের অধিকারের কথা বলে। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া, কারচুপি করা, সিল মেরে বাক্স ভরা, হ্যাঁ না ভোটের নামে হ্যাঁ ভোটে ভরা- এগুলো কে করেছে? এগুলো তো জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে।
২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি আসে। কিন্তু তাদের নমিনেশন একটা আসে লন্ডন থেকে, একটা পল্টন থেকে, আরেকটা গুলশান থেকে। লন্ডনের এলে পল্টনেরটা চলে যায়। পল্টনেরটা এলে গুলশানেরটা যায়। এই করে নির্বাচন করে। শেষ পর্যন্ত পল্টন গেল, গুলশান গেল আর লন্ডনও গেল। এক সময় নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে।
ওদের চরিত্র হচ্ছে সাধারণ মানুষের নির্যাতন করা- এমন মন্তব্য করে আওয়মী লীগ সভাপতি বলেন, এখন আবার যখন নির্বাচন আসছে তাদের নানা ফ্যাকড়া। তারা ইলেকশন করবে না। তারা ইলেকশনটা করবে কীভাবে? ওই দলের তো মাথা নেই। একটা ধড় চলছে আরকি। সেটাও একটা হচ্ছে গুলশান আরকেটি হচ্ছে পল্টন। এই দুই জায়গা থেকে তাদের কথা.. সব কিছু ওই দুই জায়গা থেকে। আর কেউ কেউ কোন অন্ধকার জায়গা থেকে যে কথা বলে! আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। সেই সুযোগ তারা ভালোভাবেই নিচ্ছে। প্রতিদিন একটা কথা। আজ হরতাল ডাকে, অবরোধ ডাকে। আর মানুষ পুড়িয়ে মারে। এমনকি গ্যাসকাটার নিয়ে রেললাইন কেটে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যা করা. এটা তো সরাসরি হত্যাকাÐ ঘটালো। বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন। একটার পর একটা আগুন দিচ্ছে। কেন এই মানুষ স্বাধীনভাবে চলতে পারবে না? কেন বার বার তাদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হবে? কেন মানুষকে আগুনে পুড়তে হবে? সেটাই আমাদের প্রশ্ন।
সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। এটা দেশবিদেশের সবাই বোঝে। কিন্তু এখানে কতগুলো.. মানে বুদ্ধি বেচিয়া জীবিকা নির্বাহ করে যাহারা, তাহারাই বুঝে না। আমাদের সাধারণ মানুষ কিন্তু বোছে। তারা আছে আমাদের সঙ্গে। একটা কথাই আজ বলবো, দেশের মানুষ জানে তাদের কীসে ভালো কীসে মন্দ, কোন দল ক্ষমতায় থাকলে তাদের কল্যাণ হয়।
দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এই দুর্বৃত্ত, অগ্নিসন্ত্রাসী, খুনি এদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ওই রেললাইন থেকে শুরু করে সব পাহারা দিতে হবে। যারাই আগুন লাগাতে যাবে, রেললাইন কাটতে যাবে, সঙ্গে সঙ্গে ধরে উপযুক্ত শিক্ষা নিতে হবে। এদের ধ্বংসাত্মক কাজ এদেশে চলতে পারে না।
নিজেদের হরতাল-অবরোধে নিজেরাই অবরুদ্ধ হয়ে যায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালের অবরোধ এখনও তারা তোলেনি। এখন আবারও অবরোধ দিয়েছে। আবারও হরতাল। তারা আবারও দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের জনগণ কী এটা মেনে নেবে? এই বার্তাটা মানুষের কল্যাণ চায় না। লুটপাটের রাজত্ব চায় না। এরা ভোটে যেতে চায় না। কারণ ওই অগ্নীসন্ত্রাসী-খুনিদের বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচন তারা বানচাল করতে চায়। সরকার উৎখাত করতে চায়। আওয়ামী লীগ কোনও অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে উঠে আসেনি। আওয়ামী লীগ এদেশের মাটি মানুষের সংগঠন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এই সংগঠন গড়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের শেকড় অনেক গভীরে। এভাবে আওয়ামী লীগকে তারা উৎখাতও করতে পারবে না। দাবাতেও পারবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ভোট ও ভাতের অধিকার আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছে। নির্বাচনি সংস্কার আমরা করেছি। ভোটের অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছি। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কাকে তারা ভোট দেবে, কে সরকারে আসবে? ওই অগ্নিসন্ত্রাস আর খুন করে জনগণের হৃদয় জয় করা যায় না। এটা তাদের জানা উচিত। এটা বুঝে তাদের চলা উচিত।

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial