আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে বেশিরভাগ দেশ। সহযোগিতা বন্ধে মার্কিন হুমকির তোয়াক্কা না করে এসব দেশ ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখন কী ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সেটা নিয়ে চলছে আলোচনা। রাজনীতিবিদ ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, সহযোগিতা গ্রহণকারী দেশগুলো শাসানো উচিত। তাদের বলা উচিত, এমনটা যেন আর না হয়। কেউ কেউ বলছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা যেনও বিপক্ষে ভোট দেওয়া দেশের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধ করে দেন। তবে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সংশয়ও রয়েছে তাদের মনে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি দুজনই আর্থিক সহায়তা বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন। সহযোগিতা বন্ধের হুমকি দিয়ে ভোটের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তাদের আমরা কোটি কোটি ডলার সহায়তা করি। আর তারা আমাদেরই বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চায়। ভোট দিক তারা, আমাদের অনেক টাকা বাঁচবে।’
ভোটের আগ মুহূর্তে দেওয়া ভাষণে নিকি হ্যালি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আজকের এই দিনটি মনে রাখবে। যে দিনে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণের শিকার হয়েছে। আমরা তখনও এই দিনটি মনে রাখব যখন অনেকে আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইতে আসবে, যা তারা প্রায় সময়েই করে।
মার্কিন দূত আরও বলেছিলেন, বিপক্ষে ভোট দিলে আর্থিক সহায়তা কমে যাবে দেশগুলোর। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিনিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু আশাও রয়েছে। বিনিয়োগ ব্যর্থ হলে আমরা অন্য কোথাও বিনিয়োগ করবো।’
বৃহস্পতিবার মার্কিন স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যানের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১২৮ টি দেশ। বিপরীতে ট্রাম্পের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে মাত্র ৯টি দেশ। ভোটদান থেকে বিরত ছিল ৩৫ দেশ। হ্যালি ঘোষণা দিয়েছিলেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভোট দেবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয় যুক্তরাষ্ট্র কেমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। এক মার্কিন সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, ভোটের জন্য দেশগুলোকে ছাড় দেওয়া হবে না। বরং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এর প্রভাব পড়বে। তবে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হেদার নরেট বলেছেন, এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জাতিসংঘ মার্কিন মিশনের এক মুখপাত্র জানান, ‘প্রেসিডেন্ট যেমনটা বলেছেন অনেক দেশই এখন জাতিসংঘে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে না। আমরা আমাদের বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়নে এই ভোটগুলো ব্যবহার করব। এটা অবহেলার সুযোগ নেই আর।’
মার্কিন রাজনীতিবিদরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, মিসর ও জর্ডানের মতো মিত্ররাও যেখানে রয়েছে সেখানে কিভাবে এই পদক্ষেপ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। রিগান ও বুশ প্রশাসনে শীর্ষ কর্র্মকতা হিসেবে দায়িত্বপালন করা এলিয়ট আব্রাম বলেন, ওই দেশগুলোতে আর্থিক সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রেরই জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখে।
তিনি মনে করেন, অন্যভাবে বিপক্ষে ভোট দেওয়া দেশগুলোর প্রতিবাদ জানাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। সেই দেশের নেতাদের সঙ্গে দেখা করা থেকে বিরত থাকতে পারেন।
আব্রাম বলেন, ‘পরবর্তীতে যেন সবাই আপনার পক্ষে ভোট দেন এমনটাই করা উচিত। তাদের এখনই বলা উচিত নয়, আমরা ক্ষুব্ধ। বরং বলা প্রয়োজন, আমরা ক্ষুব্ধ ও কিন্তু ভবিষ্যতে যেন এমনটা আর না হয়।’ সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প