ক্রীড়া প্রতিবেদক : মেজবাহ-শিরিনের দ্রুততম মানব-মানবী হওয়ার মধ্য দিয়ে রোববার পর্দা নেমেছে ৪১তম জাতীয় এ্যাথলেটিক্সের। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সমাপনী দিনের সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৩ ইভেন্টের মধ্যে ১৫টি স্বর্ণ, ২১টি রৌপ্য ও ১১টি ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে শীর্ষে আছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সমান স্বর্ণ পেলেও নয়টি রৌপ্য ও আটটি ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। তবে গেমসের সবচেয়ে আকর্ষনীয় ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্টের পুরুষ ও মহিলা দু’বিভাগের স্বর্ণই গেছে নৌ বাহিনীর ঘরে। সন্ধায় আসরের সমাপনী ঘোষনা দেন ফেডারেশনের সভাপতি এএসএম আলী কবির।
আসর শেষ হলেও আশার খবর নেই। ভালোমানের নতুন অ্যাথলেট ওঠে আসছে না তার প্রমাণ জাতীয় অ্যাথলেটিকস। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেই পুরানো মুখ মেজবাহ আহমেদ ও শিরিন আক্তার। আজ রোববার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে পুরুষ বিভাগের ১০০ মিটারে দ্রুততম মানব হয়েছেন মেজবাহ আহমেদ। তিনি সময় নেন ১০.৭৯ সেকেন্ড। অন্যদিকে মহিলা বিভাগে শিরিন আক্তার সময় নিয়েছেন ১২.৩০ সেকেন্ড। ফলে অ্যাথলেটিকসের আকর্ষন ১০০ মিটারের দু’টি স্বর্ণই গেছে নৌবাহিনীর ঘরে।
গত পাঁচ বছরে জাতীয় ও সামার টুর্নামেন্ট মিলিয়ে টানা সাতবার দ্রুততম মানবের মুকুট মাথায় ধরে রেখেছেন মেজবাহ আহমেদ। তার দাবী এর ফলে সাবেক দ্রুততম মানব মোশাররফ হোসেন শামীমের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছেন। যদিও শামীম সাত বছরে সাতটি জাতীয় টুর্নামেন্টে দ্রুততম মানবের মুকুট পড়েছিলেন। তবে ফেডারেশনের কাছেও নেই সঠিক তখ্য। তবে এরপর যা শুনালেন মেজবাহ, তাতে অবাক হওয়ার মতোই। ২৭ বছর বয়সী এই দ্রুততম মানবের কথা, অষ্টমবার দ্রুততম মানবের খেতাব জিতেই আমি অবসরে যেতে চাই। তবে এই ঘোষণা রহিত করবো, যদি জাপান অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাই।
আজ বিকেলে দ্রুততম মানবের খেতাব জিততে অবশ্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়েছে মেজবাহকে। মাত্র .১ সেকেন্ডের ব্যবধানে সতীর্থ আবদুর রউফকে (১০.৮০) পেছনে ফেলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে মেজবাহ’র আশাবাদ, কিভাবে প্রথম হতে হয়, আমি জানি। অভিজ্ঞতার একটি দামতো রয়েছে। রউফ দুই বাহু এগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আমি বুক এগিয়ে দিয়েছি। আর তাতেই বাজিমাত করেছি।
২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে শুরু মেজবাহ’র। সেবার প্রথম দ্রুততম মানবের খেতাব জেতেন। অবশ্য বাংলাদেশ গেমসকেও জাতীয় টুর্নামেন্ট ধরা হয়। এরপর আরও চারটি জাতীয় টুর্নামেন্ট ও দু’টি সামার টুর্নামেন্টেও স্বর্ণপদক জিতেছেন মেজবাহ। এবারের আসরে দ্রুততম মানবের খেতাব জিততে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। স্বর্ন জয় শেষে মেজবাহ বলেন, ২০ দিন আগে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। চারদিন বিশ্রাম নিয়ে আবার ওঠে দাঁড়াই। অনুশীলন করেছি। পরিশ্রম করেছি। তারপরেই আমাকে এই মুকুট ধরে রাখার মিশনে নামতে হয়েছে। এখন আমি কমনওয়েলথ গেমসের জন্য অনুশীলন করছি। সবাই দোয়া করবেন।
মেজবাহ’র মতো না হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়েছে শিরিন আক্তারকেও। মাত্র .১৫ সেকেন্ডের ব্যবধানে সতীর্থ সোগাহী আক্তারকে (১২.৪৫) পেছনে ফেলেন তিনি। টানা ছয়বার দ্রুততম মানবীর মুকুট ধরে রাখায় খুশী শিরিন। উচ্ছসিত শিরিন বলেন, আমি খুব খুশী টানা ছয়বার দেশের দ্রুততম মানবী হতে পেরে। আশাকরি সামনের আসরেও এই কৃতিত্ব দেখাতে পারবো।
