ডেস্ক রিপোর্ট: মাদক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সরকার যদি কঠোর ও কার্যকর কোনো অভিযান শুরু না করে তাহলে কয়েক বছরের মধ্যে দেশের তরুণ সমাজ মাদকের পাল্লায় পড়ে ধংস হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে দেশে ৭০ লক্ষাধিক মানুষ মাদকাসক্ত যাদের অধিকাংশই তরুণ। এ সংখ্যা ১ থেকে দেড় কোটি হতে পারে। তবে সরকারি হিসেবে বলা হয়েছে ৫০ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে এক সাক্ষাতকারে মাদকের বিরুদ্ধে কর্মরত প্রতিষ্ঠান ‘মানাস’এর প্রধান ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: অরূপ রতন চৌধুরী একথা বলেন। তার প্রতিষ্ঠান ঢাকার বিভিন্ন স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে।
বাংলাদেশে ইয়াবা, গাজা, হিরোইন, ফেনসিডিল মাদক হিসেবে ব্যবহার হয়। ডা: অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে লাখ লাখ ইয়াবা ও ভারত থেকে ফেনসিডিল বাংলাদেশে ঢুকছে। প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে দিয়েই সমাজের বিভিন্ন স্থানে এসব মাদক ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগও বলছে মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। তাদের হিসেবে ২০০৮ সালে ৩৬ হাজার ৫৪৩ টি ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হলেও ২০১৬ সালে এ সংখ্যা ৮০ ভাগেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৭৮টিতে। একই সময়ে গাজার ব্যবহার বেড়েছে ৫০ ভাগ। ধনী, গরিব, শিক্ষিত, অশিক্ষিত নির্বিশেষে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। সরকারি তথ্যেই বলা হচ্ছে ৭৭ ভাগ মাদকাসক্ত হচ্ছে তরুণ যাদের বয়স ১৭ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
বেসরকারি আরেক প্রতিষ্ঠান ‘ইয়থ ফার্স্ট কনসার্ন’ গত বছরের শুরুতে এক প্রতিবেদনে বলে, মাদকাসক্তের ২০ ভাগ হচ্ছে নারী।
বাংলাদেশের জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সদস্য ডা: অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, কিশোর-কিশোরীরা প্রাথমিকভাবে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। দেশে অন্তত ৩০ লাখ মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে যারা শুধু ঢাকায় প্রতি মাসে ৭২ লাখ ৫৪ হাজার মার্কিন ডলারের মাদক বিক্রি করছে। তবে মাদক বিরোধী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয় করে অভিযান কার্যকর করলে সরকার ৩ মাসের মধ্যে এ পরিস্থিতির পরিবর্তন আনতে পারে। এক্ষেত্রে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তেকে অনুসরণ করা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
র্যাবের গণসংযোগ পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান আনাদোলুকে বলেন, ধারাবাহিকভাবে এ বাহিনী মাদক বিরোধী অভিযান চালালেও এটি প্রতিষ্ঠানটির একার দায়িত্ব নয়।
