Saturday , 1 April 2023
আপডেট
Home » গরম খবর » শুধু মিল্কভিটা দুধ উৎপাদনে কোনো বাধা নেই
শুধু মিল্কভিটা দুধ উৎপাদনে কোনো বাধা নেই
মিল্ক ভিটা দুধ

শুধু মিল্কভিটা দুধ উৎপাদনে কোনো বাধা নেই

ডেস্ক রিপোর্ট: মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় প্রাণসহ ১৪টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন পাঁচ সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছে মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ।
ওই আপিলের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশটি ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত। এর ফলে আপাতত শুধুমাত্র মিল্কভিটা দুধ ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে মিল্কভিটার করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে মিল্কভিটার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে রোববার ২৮ জুলাই বিএসটিআই অনুমোদিত ১৪টি পাস্তুরিত দুধ কোম্পানির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এসব কোম্পানির দুধ বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এর আগে প্রাণ মিল্কসহ বাজারে প্রচলিত সাত কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে মানব চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি ধরা পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৭টি প্রতিষ্ঠানের পাস্তুরিত দুধের তিনটিতে এবং তিনটি অপাস্তুরিত দুধে ডিটারজেন্ট পাওয়ার তথ্য জানান গত ২৫ জুন।
এ ছাড়া উভয় ধরনের মোট ১০টি দুধের নমুনার একটিতে মিলেছে ফরমালিন। প্রাণসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডে ঘি, ফ্রুট ড্রিংকস, গুঁড়া মসলা, পাম অয়েল, সরিষার তেল, সয়াবিন তেলের মানও পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ এবং বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের পরীক্ষায় খাদ্যে বিপজ্জনক পদার্থের উপস্থিতির এ প্রমাণ মিলেছে।
২৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি লেকচার থিয়েটারে (পিএলটি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রাণমিল্ক, মিল্কভিটা, আড়ং, ফার্ম ফ্রেশ, ইগলু, ইগলু চকোলেট এবং ইগলু ম্যাংগো- এই সাত কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রাজধানীর পলাশী, গাবতলী ও মোহাম্মদপুর এই তিন বাজার থেকে অপাস্তুরিত দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল জানায়, বিএসটিআই’র মানদণ্ডে এসব দুধের সবগুলোই বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মানোত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে।
এ ছাড়া প্রাণের অন্য কয়েকটি পণ্যসহ প্রচলিত বেশকিছু পণ্যের মান নিয়েও গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তারা। যেখানে প্রাণের ফ্রুট ড্রিংকস, ঘি, হলুদ, গুঁড়া মসলাসহ কয়েকটি কোম্পানির বিভিন্ন পণ্য মানোত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানানো হয়।
তবে এর আগে ১৪ ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে আশঙ্কাজনক কিছু পায়নি বলে আদালতে রিপোর্ট দেয় বিএসটিআই। পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত দুধের মান নিয়ে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ এবং বায়োমেডিকেল সেন্টারের প্রতিবেদনের মধ্যে পার্থক্য দেখা দেয়।
সম্প্রতি খাদ্যপণ্যের গুণগত মান নিয়ে সরকার ও জনগণের উদ্বেগের কথা চিন্তা করে বেশ কয়েকটি পণ্যের ওপর পরীক্ষা চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ ও বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টার। পণ্যগুলো হল- ঘি, ফ্রুট ড্রিংকস, গুড়া মসলা- শুকনা মরিচ, গুঁড়া মসলা- হলুদ, পাম অয়েল, সরিষার তেল, সয়াবিন তেল এবং পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত দুধ। এ সব পণ্যের প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে নামিদামি কোম্পানির ৭ থেকে ১০টি করে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালানো হয়। গবেষণার ফলে দেখা যায়, অধিকাংশ নমুনাই বিএসটিআই নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ডে মানোত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে।
এর আগে বাজারে পাওয়া যায় এমন পাস্তুরিত দুধ নিয়ে ২০১৮ সালের ১৭ মে ‘পাস্তুরিত দুধের ৭৫ শতাংশই নিরাপদ নয়’ উল্লেখ করে পত্রিকায় বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে আনা হলে আদালত এ বিষয়ে রিট আবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২০ মে রিট দায়ের করেন আইনজীবী তানভির আহমেদ। ওই রিটের শুনানি নিয়ে বাজারে পাওয়া যায় এমন সব ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধের মান পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*