ডেস্ক রিপোর্ট : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও তা মোকাবেলা করা কঠিন নয়। পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরেও নয়। সরকার চ্যালেঞ্জের সঙ্গেই এটা মোকাবেলা করবে।
বৃহস্পতিবার শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালার ছয় নম্বর গ্যালারিতে মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক ও ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলার সংবাদচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে যুবলীগ এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বারবার বলছি– আমরা ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন। নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) উদ্বিগ্ন। তিনি লন্ডনে চিকিৎসায় আছেন। তারপরও প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন, নির্দেশনা দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশে থাকলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ থেমে থাকেনি। এখন মোবাইল ফোনেও নির্দেশনা দেওয়া যায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জরুরি কাজে বিদেশে যেতে পারেন। তবে তিনি বিনা অনুমতিতে যাননি। একজন মন্ত্রীই শুধু মন্ত্রণালয় নয়। এরপরও স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশে চলে এসেছেন।’
ডেঙ্গু কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও দেখা দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ফিলিপাইনে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আটশ’ জনের মৃত্যু হয়েছে, এক লাখ আক্রান্ত হয়েছে। তারা দেশে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করেছে। ভিয়েতনামেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতে কম আছে, ইন্দোনেশিয়ায় অনেক বেশি, থাইল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়েছে, সিঙ্গাপুরেও অনেকে আক্রান্ত।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মিডিয়ার হিসেব অনুযায়ী এদেশে ১৭ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ১৩ হাজার মানুষই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এটাকে মহামারি বলুন আর যাই বলুন, আমরা যা সত্য তা স্বীকার করেই মোকাবেলায় কাজ করছি। অবস্থা অ্যালার্মিং। তবে আমরা এটা মোকাবেলা করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমরা সাহস রাখি– শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবো।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হারানো শোকের মাসে ১৫ আগস্ট আমাদের চেতনায় শক্তি সঞ্চার করে। আর এই শোকের মাস এলেই জঙ্গি, নাশকতাকারী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। একদিকে আমাদের হারানোর বেদনা, আরেকদিকে আবারও নতুন করে হারানোর সেই শঙ্কা কাজ করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা রাজনৈতিক নেতা শেখ হাসিনা। আগস্ট মাস এলে আমাদের প্রিয় এই নেতাকে ঘিরেই বিপদের আশঙ্কা থাকে। কারণ এই সময় অশুভ তৎপরতা যারা চালায়, তারা জেগে ওঠে। তাদের বিষয়ে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতি করে একটি দল, তারাই ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তারা এই হত্যাকাণ্ডের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, পেছন থেকে মদদ জুগিয়েছে, খুনিদের পুনর্বাসিত করেছে। ইনডেমনিটি আইন জারি করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা কারা? তাদের নেতা জিয়াউর রহমান। এদেশে রাজনীতিতে হত্যাকারীদের পুনর্বাসন করেছে জিয়াউর রহমান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উদার রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি জানেন, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কারা ছিল। শেখ হাসিনা ও দেশের জনগণও জানেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নেপথ্যে কারা ছিল। তারপরও গণতন্ত্র ও সুশাসনের স্বার্থে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজের সম্পর্ক রাখতে চায়।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির টপ টু বটম নেতারা নির্বাচনে ব্যর্থ, আন্দোলনেও ব্যর্থ। অন্যের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলার আগে বিএনপি নেতাদের টপ টু বটম পদত্যাগ করা উচিত।’
ওবায়দুল কাদের পরে সংবাদচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন এবং প্রদর্শনীটি ঘুরে ঘুরে দেখেন। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ সেরনিয়াবাত, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, ফারুক হোসেন, মহিউদ্দীন আহমেদ মহি, সুব্রত পাল, কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, জাফর আহমেদ, ইসমাইল হোসেন, মাইনউদ্দীন রানা, রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।
