পাপুলকে বহিষ্কার করে তার আসন কেন শূন্য ঘোষণা হবে না: হাইকোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট: শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নির্বাচনি হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলকে সংসদ সদস্য (এমপি) পদ থেকে বহিষ্কার করে তার সংসদীয় আসন কেন শূন্য ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব, লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক,শহিদ ইসলাম এমপিসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ আওসাফুর রহমান ও মো. সালাহ উদ্দিন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জেসমিন সুলতানা সামশাদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামীউল আলম সরকার।
পরে আইনজীবী সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নির্বাচনি হলফনামায় পাপুল মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি হলফনামায় স্নাতকোত্তর উল্লেখ করে জমা দিয়েছেন স্নাতক সনদ। এ মিথ্যা তথ্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১২(সি) এর লঙ্ঘন। তাই আদালতে রিটটি দায়ের করেন ওই আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচনের একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী আবুল ফয়েজ ভূঁইয়া। আদালত সেই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করলেন। ’
এদিকে, রিট আবেদনের সঙ্গে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ সংযুক্ত করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, পাপুল প্রতারণা, জালিয়াতি করে শুধু অবৈধ সম্পদই অর্জন করেননি। তিনি জালিয়াতি করে ভুয়া শিক্ষাগত সনদও জোগাড় করেছেন। তিনি সিয়েরা লিয়নের মিলটন মরগাই কলেজ অব এডুকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ব্যাচেলর অব সোশ্যাল সায়েন্স ইন ইকোনমিক্স বিষয়ে স্নাতক সনদ সংগ্রহ করেছেন। শিক্ষাবর্ষ ১৯৮৭। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, পাপুল যে বিষয়ের ওপর স্নাতক সনদ জোগাড় করেছেন কলেজটিতে ওই বিষয়ের ওপর কোনও ডিপার্টমেন্ট নেই।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘‘খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাপুল ২০১৬ সালে কুয়েত থেকে নিজ এলাকা লক্ষ্মীপুর ফিরে ‘লক্ষ্মীপুর২৪ডটকমে’ একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এটি প্রকাশ করা হয় একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর। সেখানে তিনি বলেছেন, ঢাকার তিতুমীর কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন ১৯৯২ সালে। সিয়েরা লিয়নের মিলটন মরগাই কলেজের নামে স্নাতক সনদ সংগ্রহ করেছেন ১৯৮৭ সালে। ১৯৯২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও এর আগে ১৯৮৭ সালে স্নাতক পাসের তথ্যের এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ হিসাব তাকে বিতর্কিত করেছে। নিউইয়র্ক সিটি কলেজে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন বলে ওই সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন।’
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৬ জুন স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে গ্রেফতার করেন। কুয়েতের আইনশশৃঙ্খলা বাহিনী তার বিরুদ্ধে কুয়েতে মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগ এনেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *