ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অন্যতম অংশ হলো অ্যান্টিবডি। তারাই মূলত দেহের কোষে ভাইরাস প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। তবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই অ্যান্টিবডি ২৬ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষকরা।
গবেষকরা বলছেন, প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় একাধিকবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।
মধ্যজুন থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত ইংল্যান্ডজুড়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এতে দেখা গেছে, লক্ষণ নিয়ে আক্রান্তদের তুলনায় লক্ষণবিহীন করোনা আক্রান্তদের দেহে অ্যান্টিবডি হ্রাসের হার এক চতুর্থাংশ বেশি। ৭৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীদের দেহে অ্যান্টিবডি যে হারে হ্রাস পায় তুলনামুলকভাবে তারচেয়ে কম হারে হ্রাস পায় ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের দেহে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনায় সংক্রমণের পর মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধারবাহিকভাবে কমতে থাকে। মানুষের দেহের অ্যান্ডিবডি দীর্ঘমেয়াদে ভাইরাসের বিরুদ্ধে কতোটা সময় লড়াই করতে পারে তা এখনও জানা যায়নি।
ইমপেরিয়াল স্কুল অব পাবলিক হেলথের পল ইলিয়ট বলেন, ‘কোন মাত্রার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অ্যান্টিবডি প্রদান করে কিংবা এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতোটা সময় টিকে থাকে তা স্পষ্ট নয়।
গবেষক ওয়ার্ড হেলেন বলেন, প্রতিরোধ ক্ষমতা আশঙ্কাজনক হারে কমছে। পরীক্ষার মাত্র তিন মাসেই আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ২৬ শতাংশ অ্যান্টিবডি হ্রাস পেয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলেন, অ্যান্টিবডি আমাদের কোষে প্রবেশে করোনাভাইরাসকে বাধা দেয় এবং অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উজ্জীবিত করে। তবে কোন ধরনের অ্যান্টিবডি করোনা মোকাবিলা করছে তা এখনও নিশ্চিত জানা যায়নি। মানবদেহে অনেক অ্যান্টিবডি আছে। তার মধ্যে একটি হলো টি-সেল। এই অ্যান্টিবডিটি ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক অ্যান্ডি বার্ক্লে বলেন, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে আমরা দেখতে পাই যে অ্যান্টিবডি যে হারে কমে প্রতিরোধ ব্যবস্থাও সেই হারে কমতে থাকে। আর এটাই শঙ্কার কারণ।
চার ধরনের করোনভাইরাস রয়েছে এবং প্রতি ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা খুবই কম। আশার কথা হচ্ছে, দ্বিতীয় সংক্রমণের ঝুঁকি প্রথমবারের চেয়ে কম। কারণ এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই শিখে যায় অ্যান্টিবডি। অধ্যাপক গ্রাহাম কুক বলেন, এখন টিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সূত্র: বিবিসি
