ডেস্ক রিপোর্ট : প্রতি বছরই নূতনের বার্তা নিয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসে বৈশাখ। নববর্ষ উৎসব শুধু আমাদের দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। সারা বিশ্বময় বাংলাভাষী মানুষের উৎসব বৈশাখ। এবারও বাংলা নববর্ষ বরণে নানা আয়োজন করা হয়েছে।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বাংলা নববর্ষের বিশেষ দিক তুলে ধরে ক্রোড়পত্র বের করেছে। সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলে নববর্ষকে ঘিরে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে।
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বর্ষবরণে বর্ণাঢ্য আয়োজনের ঘনঘটা। অনাকাংক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এবারও পহেলা বৈশাখের মূল আকর্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।
এদিকে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া পৃথক পৃথক শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন।
মুসলিম ঐতিহ্যের হিজরি সনকে ভিত্তি করেই বাংলা সনের উৎপত্তি হয়েছে। মুঘল সম্রাট আকবর বাংলার কৃষকদের সুুুবিধার্থে এবং তার সিংহাসন আরোহনের বছরকে স্মরণীয় রাখতে সভাজ্যোতিষী আমীর ফতেউল্লাহ সিরাজীর (দৈবে দশমরতœ) পরামর্শে হিজরি ৯৬৩ সনকে বাংলা ৯৬৩ সন ধরে বাংলা সন গণনার নির্দেশ দেন। অধিকন্তু পারস্যের (ইরানের) নববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান ‘নওরোজ’ এর আদলে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সূচনাও করেন। তার আনুকূল্যে ও পৃষ্ঠপোষকতায় জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হতো। ‘নওরোজ’ অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ ‘মিনা বাজার’। আর এ মিনা বাজারের আদলে বাংলা নববর্ষ উৎসবে যোগ হয়েছে ‘বৈশাখী মেলার’।
বরাবরের মতো এবারো রাজধানীর রমনা পার্ক ও আশপাশ এলাকা বর্ষবরণ উৎসবের প্রাণকেন্দ্র। বর্ষবরণের সকল প্রস্তুুতি গতকালই সম্পন্ন হয়েছে। পহেলা বৈশাখে যাতে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে রমনা বটমূল ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা, চারুকলা ইনস্টিটিউট, শাহবাগ, শিশুপার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, মৎস্যভবন, বাংলা একাডেমি, হাইকোর্ট এলাকাসহ রমনা পার্কের চারপাশে পথে পথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু হয়েছে কয়দিন আগে থেকেই। বিপুলসংখ্যক পুলিশ-র্যাবের পাশাপাশি বটমূলের চারপাশে থাকবে ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা এবং বিস্ফোরক শনাক্ত করার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি।
রাজধানীতে যানবাহন ও পথচারী চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থা ও তাদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যৌথভাবে কাজ করছে সব সংস্থা। সার্বিক নিরাপত্তা ও নজরদারি নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে কন্ট্রোল রুম, অবজারভেশন পোস্ট ও চেক পোস্ট। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি থাকছে গোয়েন্দা দলের সদস্য, বোমা ডিসপোজাল টিম ও মেডিকেলল টিম।