ডেস্ক রিপোর্ট : বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর বৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশন তার সম্পদের তথ্য প্রাথমিক যাচাই বাছাই করার পর তার অবৈধ সম্পদের ব্যাপারে খোঁজ নিতে অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে। মঙ্গলবার দুদকের উপ-পরিচালক শামসুল আলমকে এ অনুসন্ধান টিমের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে দুদক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অপরদিকে অসুস্থতার কথা জানিয়ে আব্দুল হাই বাচ্চুর একমাসের সময় চেয়ে করা আবেদনটি নাকচ করে দিয়েছে কমিশন। গত রবিবার আব্দুল হাই বাচ্চু অসুস্থতার কথা জানিয়ে দুদকে এক মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেছিল। কমিশন আবেদনটি যাচাই বাছাই করে নাকচ করে দিয়েছে। বেসিক ব্যাংক ঋণ জালিযাতির মামলার তদন্তে তাকে শিগগিরই তৃতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
দুদক জানায়, গত ১৭ ডিসেম্বর আব্দুল হাই বাচ্চুর তৃতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। ওই দিন ‘অসুস্থতার’ কারণ দেখিয়ে তিনি সময় চেয়ে দুদকে লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনে তিনি জানান, রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাকে এক মাসের সময় দেয়া হোক। এদিকে দুদকের কর্মকর্তারা ওই হাসপাতালে যোগাযোগ করে জানতে পারেন আব্দুল হাই বাচ্চু ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে একদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। কর্তমানে তিনি বাসায় রয়েছেন। তার আবেদনে হাসপাতালের কথা বলা হলেও তিনি ওই হাসপাতালে না থাকায় তার আবেদন নাকচ করে দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কয়েক দফা পর্যবেক্ষণ আসার পর মামলা তদন্তের জন্য দুদক টিম গত ২২ নভেম্বর ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুসহ ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠায়। তার ধারাবাহিকতায় বাচ্চুকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, বেসিক ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় মোট ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরপর বংশাল ও মতিঝিল থানায় আরো দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলা গুলোতে ২ হাজার ৬৫ কোটি টাকা অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা রযেছেন ২৬ জন। এর মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে ৪৮ মামলায় , ডিএমডি ফজলুস সোবহান ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থ ২৩টি, আইটি শাখার মো. সেলিম আটটি এবং বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এ মোনায়েম খান ৩৫টি মামলার আসামি। তবে কোনো মামলায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুরসহ পরিচালনা পর্ষদের কাউকে আসামি করা হয়নি। ওই মামলাগুলোর বাকি ১৩০ জন আসামি হলেন ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে বেসিক ব্যাংকের তিনটি শাখায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। দুদক ২ হাজার ৬৫ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। তবে বাকি আড়াইহাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান চলমান। অনুসন্ধান শেষে সেগুলোর ব্যাপার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।