নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছেছে। শনিবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ চেয়ে এসকে সিনহার আবেদনটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পৌঁছেছে। সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে এই আবেদনপত্রটি এসেছে।’
তবে এর আগে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। আমার কাছে (এসকে সিনহার) কোনো পদত্যাগপত্র বা চিঠি আসেনি।’ আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি (এসকে সিনহা) পদত্যাগপত্র পাঠালে, সেটা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। আমি যতদূর জানি, এখনও কোনো পদত্যাগপত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছায়নি। যখন পৌঁছাবে তখন আকাশে চাঁদ উঠার মত আপনারাও (সাংবাদিকরা) জানতে পারবেন।’
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা পদত্যাগ করেছেন বলে আজ শনিবার সকাল থেকেই গুঞ্জন ছিল। বিতর্কের মধ্যে গত ১৩ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করা সিনহার ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে শুক্রবার (১০ নভেম্বর)।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার কথা বলে গত ৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসের ছুটি নেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি দাবি করছে, প্রধান বিচারপতিকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
এস কে সিনহা ছুটি নেয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পান আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা। পরে প্রধান বিচারপতি সিনহা ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশে অবস্থান করতে চান- বিষয়টি উল্লেখ করে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১০ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠি পাঠান।
১২ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ২ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে বা তার কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা।
বিদেশে যাওয়ার সময় এক বিবৃতিতে এসকে সিনহা নিজেকে সম্পূর্ণ সুস্থ দাবি করে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করলে এটি সহজেই অনুমেয় যে, সরকার উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করছে এবং এর দ্বারা বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।’