কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার বিপক্ষে এবং ঐক্যবদ্ধ স্পেনের দাবিতে আজ রবিবার ওই অঞ্চলের রাজধানী বার্সেলোনা শহরে বিক্ষোভ হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ এ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। ‘আমরা সবাই কাতালান’ নামের একটি সংগঠনের আয়োজনে এ সমাবেশের প্রতি স্পেনের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সবাই সমর্থন জানিয়েছে। খবর বিবিসির
মাদ্রিদের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, তারা কাতালান প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণ হাতে তুলে নিয়েছে এবং নতুন নির্বাচনের ডাক দিচ্ছে।
ঐক্যবদ্ধ স্পেনের সমর্থনে এবং কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার গণভোটের বিরুদ্ধে গতকাল স্পেনের রাজধানী মাদিদ্রে যে বিশাল সমাবেশ হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে আজ বার্সেলোনায়।
সমাবেশে যোগ দেওয়া এক নারী বলছিলেন, এই সঙ্কট তৈরির জন্য কার্লেস পুজডেমনকে কারাগারে ঢুকানো উচিৎ। মারিয়া লোপেজ নামের এই মহিলা বলছিলেন, আমরা চাই তারা যেন আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে না পারে। এই লোকটি আমাদের ধ্বংসের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে। আমারা কোনোভাবেই তার কথা মেনে নেবনা।
স্পেনের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এই সমাবেশে সমর্থন দিচ্ছে।
অন্যদিকে শনিবার কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক সরকারকে বরখাস্ত করার পর আঞ্চলিক সরকারের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে স্পেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে। কাতালোনিয়া পুলিশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্পেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
অন্যদিকে ক্ষমতাচ্যুত কাতালান প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজডেমনকে মাদ্রিদের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে, তার ভাষায়, গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য তার সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে তিনি হুঁশিয়ার করেছিলেন যে মাদ্রিদ তাকে উৎখাতের চেষ্টা করলে কাতালোনিয়ায় অসহযোগ আন্দোলন শুরু হবে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কাতালোনিয়া আঞ্চলিক সরকারের কর্মকর্তারা সে ধরনের নির্দেশ অমান্য করছেন কি করছেন না সেটা টের পেতে আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।
ওদিকে কাতালোনিয়ায় কেন্দ্রের শাসন আরোপ করলেও স্পেনের কেন্দ্রিয় সরকার এখনই কোনো কট্টর অবস্থানে যাচ্ছেনা।
এমনকী স্প্যানিশ সরকারের একজন মুখপাত্র বরেছেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে মি পুজডেমনর কোন বাধা নেই।
সরকারি এক মুখপাত্র বলেন, দুই মাসের মধ্যে কাতালোনিয়ায় নতুন নির্বাচনের কথা ভাবা হচ্ছে, এবং আমি নিশ্চিত মি পুজমেোঁ প্রার্থী হবেন, যদি তিনি তা চান।
তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পুজডেমনকে এবং তার সরকারের সাথে মাদ্রিদে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে সম্পর্ক এতটাই তিক্ত হয়েছে যে প্রস্তাবিত নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ প্রায় অসম্ভব। বরং এমন কানাঘুষো শুরু হয়েছে যে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অমান্য করার চেষ্টা হলে, তাকে গ্রেপ্তারের কথাও ভাবা হচ্ছে।
এমন কথাও বাতাসে ঘুরছে যে পুজডেমন এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগিরা হয়তো গ্রেপ্তার এড়াতে ইউরোপের অন্য কোনো দেশে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবছেন।