ধর্ম ও জীবন ডেস্ক: আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনেক মর্যাদা এবং সম্মান দান করেছেন। কুরআনুল কারিমে তাঁর বিশেষ বিশেষ মর্যাদার কথা উল্লেখিত হয়েছে। যা অন্য নবি-রাসুলদের ক্ষেত্রে হয়নি। আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবির সম্মান বৃদ্ধিতে যেখানে তাঁর নাম উল্লেখ করেছেন সেখানে প্রিয়নবির নামও উল্লেখ করে তাঁর উচ্চ মর্যাদার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খ্যাতি বা সুনাম বৃদ্ধিতে কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণনা করে বলেন, ‘এবং আপিম আপনার খ্যাতি বা সুনামকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছি।’ (সুরা আলাম নাশরাহ : আয়াত ৪)
তাওহিদের স্বীকৃতি বাক্য পবিত্র কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়নবির রেসালাতের স্বীকৃতি বাক্য ‘মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ সংযোগের মাধ্যমে তাঁকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন।
শুধু কালেমার মধ্যেই নয় বরং আজান, ইক্বামত এবং নামাজের তাশাহহুদসহ অনেক স্থানে তিনি তাঁর নাম পাশাপাশি প্রিয়নবির নাম উল্লেখের মাধ্যমে তাঁর সুনাম ও সুখ্যাতিকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন। যা অন্য কোনো নবি-রাসুলকে দান করেননি। যার ফলে প্রতি মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উচ্চ মর্যাদার ঘোষণা ও তাঁর প্রতি অসংখ্য দরূদ ও সালাম প্রেরিত হচ্ছে।
কুরআন ছাড়াও পূর্ববর্তী আসমানি গ্রন্থসমূহেও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উচ্চ মর্যাদার বিস্তারিত বিবরণ ঘোষণা করা হয়েছে। ফেরেশতাদের মাঝেও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুনাম ও খ্যাতি উল্লেখের মাধ্যমে তার উচ্চ মর্যাদার ঘোষণা করা হয়।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উচ্চ মর্যাদার বিষয়ে তাফসিরে ইবনে কাসিরে এসেছে, ‘যেখানে আমার (আল্লাহর) আলোচনা হবে, সেখানে আপনারও (প্রিয়নবির) আলোচনা হবে। দুনিয়া ও পরকালে আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয়নবির আলোচনা বুলন্দ করেছেন।
দুনিয়াতে কোনো বক্তা, কোনো খতিব, কোনো বাগ্মী, কোনো নামাজি ব্যক্তি এমন নেই, যিনি আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দিয়েছেন কিন্তু প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রেসালাতের কথা উচ্চারণ করেন না।
হজরত ইবনে জারির বর্ণনা করেছেন, হজরত জিবরিল প্রিয়নবির কাছে এসে বলেন, ‘আমার ও আপনার প্রতিপালক আপনার আলোচনাকে কিভাবে সমুন্নত করবেন তা তিনি জানতে চান।’ প্রিয়নবি বললেন, ‘সেটা আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।’ তখন জিবরিল আলাইহিস সালাম জানিয়ে দেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আমার কথা যখন আলোচনা করা হবে; তখন আমার রাসুলের কথাও আলোচিত হবে।’
এ কারণেই আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্যকে তার নিজের আনুগত্য হিসেবে শামিল করে উচ্চ মর্যাদা প্রদান করেছেন। আল্লাহ তাআরা কুরআনে পাকে বান্দার প্রতি তাঁর আদেশ পালনের নির্দেশের পাশাপাশি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ পালনের নির্দেশও প্রদান করেছেন। এ সবই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উচ্চ মর্যাদা ঘোষণার শামিল।
পরিশেষে…
মহান আল্লাহ তাআলা যেখানে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুনাম ও সুখ্যাতি বর্ণনায় উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন। সেখানে মুসলিম উম্মাহর উচিত প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সে আলোকে জীবন যাপন করা। প্রিয়নবির সুন্নাতসমূহের ওপর আমল না করে শুধু মুখে মুখে নবির ভালোবাসার কথা বললেই তাঁর প্রশংসা হবে না। বরং কথা ও কাজের মিলই হবে উম্মতে মুহাম্মাদির একান্ত কাজ। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবির পথে ও মতে জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। আমিন।