মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১

খুচরা জিনিস নিয়ে কোর্ট সময় কাটায় কেন : প্রধানমন্ত্রী

editor
নভেম্বর ২১, ২০১৭ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার বৈধতা নিয়ে সংসদে উত্থাপিত প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘লাখ লাখ মামলা পড়ে আছে কোর্টে, তার কোনো খবর নাই। বাচ্চারা পরীক্ষা দেবে কি দেবে না সেটা নিয়ে মামলা করে বসে থাকে। সেটা নিয়েও রিট করে। সেটা নিয়েই কোর্ট সময় কাটায় অথচ অনেক জরুরি মামলা, এতগুলো সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়েছে। জেএমবি গ্রেফতার হয়েছে। অনেকের ফাঁসির শুনানি বাকি সেগুলোর শুনানির সময় নেই। এই সমস্ত খুচরা জিনিস নিয়ে কোর্ট সময় কাটায় কেন?’ জাতীয় সংসদে মঙ্গলবার রাতে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এর আগে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ আদালতের রিট উপেক্ষা করে চলমান পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, এসব পরীক্ষা সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট হয়েছে। এই রিটের সুরাহা না করে পরীক্ষা নেয়া আদালত অবমাননা। আদালত যদি এই পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে তাহলে এই পরীক্ষা নিয়ে কোনো লাভ হবে না।
তিনি আরও দাবি করেন, শিশুদের দিয়ে এই ধরনের পরীক্ষা একটি বাণিজ্য। এর ফলে কোচিং ব্যবসা রমরমা হচ্ছে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জানি না তিনি (ফিরোজ) কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়েছেন বা পড়ালেখা করেছেন। এই পরীক্ষার ব্যবস্থা যখন আমি করেছি তখন এর জন্য আমিই দায়ী। আমরা ছেলে-মেয়েদের কল্যাণের জন্য এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করছি। আমরা উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিচ্ছি। হয়ত দেখা যাবে কোনদিন রিট করে বসে আছে, কেন বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। কোনো কিছু বলা যায় না।’
শেখ হাসিনা বলেন, আগে বিদ্যালয়ের কয়েকজন নির্বাচিত শিক্ষার্থীকে বিশেষভাবে পড়াশুনা করানোর মাধ্যমে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হত। এতে অন্য শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হত। সবাই যেন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে এজন্য বর্তমান পদ্ধতি চালু করেছে সরকার। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এর ফলে পিছিয়ে পড়ারা আরও পিছিয়ে পড়ছিল। তাই আমরা এই পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেছি। এর ফলে এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষার ফলাফলের পর একজন শিক্ষার্থী যখন একটি সার্টিফিকেট হাতে পায় তখন তাদের মনে আনন্দ, আত্মতৃপ্তি ও মনোবল সৃষ্টি হয়। এতে পরবর্তীতে তারা যখন এএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় তখন তাদের মধ্যে এই মনোবলটা কাজ করে। পরীক্ষা সম্পর্কে ভীতি দূর হয়। এতে তাদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার পাশাপাশি কে কোন বিষয়ে পরবর্তীতে পড়াশুনা করবে এই বিষয়টিও নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়।
এ বিষয়ে রিট করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক শ্রেণির লোক রয়েছে যারা কথায় কথায় আদালতে রিট দায়ের করে। এতোসব বিষয় থাকতে শিক্ষা নিয়ে তাদের এই রিট অত্যন্ত দুঃখজনক।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কিছু লোক যেন আছেই অনবরত রিট করা আর এটার ওপরে আলোচনা করা। এই ব্যাখা বহুবার দিয়েছি। তারপরেও যখন প্রশ্ন তুললেন কেন পরীক্ষা হবে আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমি জিজ্ঞাস করি- ছেলেমেয়েরা কি মনোযোগী হচ্ছে না। কোচিং আলাদা জিনিস। যখন কয়েকটা ছেলে-মেয়ে বেছে নিয়ে পড়ানো সেটাও একটা কোচিং। শিক্ষকরা আলাদা করে পড়াচ্ছেন সেটা কি কোচিং না। আমি জানি না কোর্ট কি রায় দেবে, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার যদি রায় দেয় এর থেকে দুঃখের আর কিছু থাকবে না।
এর আগে ফিরোজের বক্তব্যের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এই সংসদে পাসকৃত জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। তাহলে তা অবৈধ হবে কেন? পরে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য ফ্লোর নেন।
জানা যায়, গত বছরের ৩১ আগস্ট এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী আকন্দ একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। আদালত পিটিশন গ্রহণ করে কেন পিইসি ও জিএসসি পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেন।

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial