অনলাইন ডেস্ক
দার্জিলিং এ বহুদিন পর চা বাগানগুলো আবার কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। বাগানগুলোতে চলছে ডালপালা ছাটাই আর আগাছা পরিষ্কারের কাজ। দার্জিলিং এ বছরে আট মিলিয়ন কিলোগ্রাম চা উৎপাদন হয়। যার দুই তৃতীয়াংশ রপ্তানি হয় বিশ্বের নানা দেশে। দার্জিলিং চায়ের ক্রেতাদের বড় অংশ রয়েছে ইউরোপে।
দার্জিলিং এ চা পাতা তোলার মুল মৌসুম হলো মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। অবরোধের কারণে এর অর্ধেক সময়টাই সেখানে চা পাতা তোলা ও অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ ছিলো।
তাতে দার্জিলিং এর চা ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি হয়েছে ৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড। মন্টেভিয়েট চা বাগানের ম্যানেজার জায়গাহান ইয়োগী বলছেন দার্জিলিং এর চা শিল্প খুব খারাপ সময় পার করছে।
তিনি বলছিলেন “দার্জিলিং চা শিল্পের জন্য এটি একটি বড় বিপদ। এ বছর আমরা মোটে ৩০ শতাংশ চা পাতা তুলতে পেরেছি। বাকি পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এই শিল্পের এখন সরকারি সহায়তা দরকার। তা না হলে এই শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে অদূর ভবিষ্যতে চরম মুশকিলে পড়তে হতে পারে”
চায়ের বাজারে তা দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব রেখে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
চায়ের বাজারে তা দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব রেখে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
এ বছরের জুন মাসে স্বাধীন গোর্খা ভূমির দাবিতে দার্জিলিং এ আন্দোলন শুরু করে গোর্খা জন মুক্তি মোর্চা। ১০০ দিনের কিছুটা বেশি সময় ধরে চলা সেই অবরোধ সেপ্টেম্বরের শেষে প্রত্যাহার করা হয়। আর তাতে সেখানকার চা বাগানগুলোর কার্যক্রম পুরোপুরি থমকে যায়। কারণ বাগানের শ্রমিকদের সবাই গোর্খা জাতিগোষ্ঠীর মানুষ যারা এই আন্দোলনকে ব্যাপক সমর্থন দিয়েছিলেন। স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে দার্জিলিং এমন গান রচিত হয়েছে। কাজে ফিরলেও স্বাধীন রাষ্ট্রের কথা ভুলে যাননি শ্রমিকেরা।
একজন বলছিলেন “আমরা চেয়েছিলাম কাজও চলুক, আন্দোলনও চলুক। তবে আমরা যে আবার কাজে ফিরে যেতে পেরেছি, আর তাতে যে আমাদের রোজগারটা আবার শুরু হয়েছে সেটা ভালো হয়েছে। কিন্তু আমরা চাই আন্দোলনটা চলুক। আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য একটা আলাদা রাষ্ট্র চাই”
অন্য একজন শ্রমিক বলছিলেন “আমাদের দুঃখ হচ্ছে যে অবরোধ প্রত্যাহার করতে হলো। পরিবারের পেটে ভাতের যোগান দিতে আমাদের কাছে টাকা পয়সা ছিলো না। কিন্তু তবুও একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণে এতটুকু ত্যাগ করতে আমরা রাজি ছিলাম” দার্জিলিং এ বাগানগুলো তাদের নিয়মিত কার্যক্রম শুরু করলেও চা উৎপাদন পুরোপুরি শুরু হতে আরো কয়েকমাস সময় লেগে যাবে।
আগামী বছরের মার্চের আগে পুরোদমে সরবরাহ শুরু হবে না। তাই দার্জিলিং চা যাদের পছন্দ তাদের হয়ত সামনে বেশি পয়সা খরচ করতে হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।