সুমন চৌধুরী : জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ গর্ডন গ্রিনিজকে সংবর্ধনা দিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনন্য অবদান রাখার কারণে সোমবার রাতে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে গর্ডন গ্রিনিজকে সংবর্ধনা দেয় বিসিবি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নিজের অভিমত জানাতে গিয়ে গ্রিনিজ বলেন, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট আমার হৃদয়ে ধারণ করি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক উন্নতি করেছে। যেখানেই থাকি বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখি। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভালো অবস্থানে পৌঁছেছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের ক্রিকেট ভবিষ্যতে শীর্ষে অবস্থান করবে। এই সংবর্ধনা দেয়ার জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ের পর আমাকে নাগরিকত্ব দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশে আসতে পেরে আমার ভালো লাগছে। এখানে আমি বারবার আসতে চাই।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট উত্থানের জন্য গ্রিনিজকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার অবদান কখনোই ভোলার মত নয়।
১৯৯৪ সালে আইসিসি ট্রফিতে ব্যর্থতার পরিচয় দেয় বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপে খেলা স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায়। কিন্তু তিন বছর পরই নিজেদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয় বাংলাদেশ এবং ১৯৯৭ সালে মালেশিয়ায় আইসিসি ট্রফি জিতে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।
বাংলাদেশের ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন পূরণের সারথি ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ওপেনার গ্রিনিজ। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফির কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। তার অধীনে আইসিসি ট্রফির ফাইনালে কেনিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জিতে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। এমন দুর্দান্ত অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সম্মানসূচক নাগরিকত পান গ্রিনিজ।
এরপর গ্রিনিজের অধীনে ১৯৯৯ সালের ১৭ মে বিশ্বকাপে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হেরে যায় টাইগাররা। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের পর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের মত বড় আসরে প্রথম জয়ের পরের ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের লজ্জা পায় বাংলাদেশ। তবে বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচটি ঐতিহাসিক করে রাখতে পারে আকরাম-বুলবুলরা। পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে তাকে বরখাস্ত করে বিসিবি।
তবে সে সকল স্মৃতি এখন অতীত। সেটি গ্রিনিজ নিজেও ভুলে গিয়েছেন। তাই তো নিজ ইচ্ছাতেই আবারো বাংলাদেশের মাটিতে পা দিয়েছেন তিনি। গতকাল রাতে সস্ত্রীক ঢাকায় এসে পৌছান গ্রিনিজ। ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তার সময়ের ও বর্তমান খেলোয়াড়দের সাথে আজ সাক্ষাত করেছেন ও ছবি তুলেন গ্রিনিজ।
পাঁচদিনের সফর শেষে আগামী ১৮ মে ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে ৬৭ বছর বয়সী গ্রিনিজের।