আজকের প্রভাত ডেস্ক
চীনের দিকে বাজপাখির মতো দৃষ্টি দিতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্প। কারণ, তিনি এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদে যাদেরকে বাছাই করেছেন, তা চীনের প্রতি হার্ডলাইনের ইঙ্গিতই দেয়। বেইজিং-এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের সাবেক পরিচালক জন র্যাটক্লিফকে তিনি সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির প্রধান হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। ফক্স নিউজের উপস্থাপক ও বর্ষীয়ান সেনা পিটি হেগসেঠক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং ফ্লোরিডার কংগ্রেসম্যান মাইকেল ওয়াল্টজকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীনত করেছেন।
এর আগে নিউ ইয়র্ক থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য এলিসে স্টেফানিককে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। তবে ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিওর ভাগ্য এখনও ঝুলে আছে। তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বাছাই করা হতে পারে বলে আলোচনা আছে। তবে ট্রাম্প এখনও এ পদে সিদ্ধান্ত পাকা করেননি। যে ৫ জনের বিষয় সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের জন্য সুপরিচিত। তারা বেইজিংয়ের প্রতি হার্ডলাইনে থাকার জন্যও সুপরিচিত।
ওদিকে টেসলা এবং স্পেসএক্স-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক এবং উদ্যোক্তা বিবেক রামাস্বামী ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’র নেতৃত্বে দেবেন বলে বলা হয়েছে। এর মধ্যে চীনে ব্যবসার বিস্তৃত স্বার্থ আছে ইলন মাস্কের। চীন সরকারের বিষয়ে তিনি তুলনামূলক ইতিবাচক বিবৃতি দেয়ার জন্য সবাই তার দিকে বাঁকা চোখে তাকান। চীনের দিকে বাজপাখির মতো দৃষ্টি আছে আরও বেশ কয়েকজনের। তারা ট্রাম্প প্রশাসনে যোগ দেয়ার প্রার্থী তালিকায় আছেন বলে খবর ভাসছে ইথারে। এর মধ্যে আছেন জার্মানিতে দায়িত্ব পালন করা সাবেক রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রেনেল, টিনেসির সিনেটর বিল হ্যাগার্টি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথাইজার।
বিষয়টি জানেন এমন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল লিখেছে, ‘ট্রেড জার’ হিসেবে লাইথাইজারকে পেতে চান ট্রাম্প। প্রথম দফা ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদে তার বাণিজ্যিক যুদ্ধে বড় রকম ভূমিকা পালন করেছিলেন লাইথাইজার। তিনি চীনা বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে সহায়তা করেছিলেন। এবার নির্বাচনে আগে প্রচারণার সময় চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৬০ ভাগ শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। লাইথাইজার তার লেখা ‘নো ট্রেড ইজ ফ্রি: চেঞ্জিং কোর্স, টেকিং অন চায়না, অ্যান্ড হেল্পিং আমেরিকাস ওয়ার্কার্স’ বইয়ে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য আরও কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি রপ্তানি এর মধ্যে অন্যতম।
উল্লেখ্য, ডনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর যে শুল্ক আরোপের কথা বলেছেন তাতে শুধু চীনই যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন নয়। এশিয়ার বাকি অঞ্চলেও এর প্রভাব পড়বে। কারণ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ অর্থনীতি চীনের সঙ্গে তাদের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।