নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসিক ব্যাংকের কয়েক হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) যতটুকু বলা সম্ভব ছিল সব বলেছেন বলে দাবি করেছেন বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু। ব্যাংকটির এ সংক্রান্ত অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সোমবার দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
এসময় তিনি বলেন, ‘দুদকের কর্মকর্তারা অভিযোগগুলো নিয়ে তদন্ত করছে। এ বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমার পক্ষে যেটুকু বলা সম্ভব ছিল আমি তার জবাব দিয়েছি। প্রয়োজনে আরও সহযোগিতা করবো। মামলার অভিযোগ তদন্তাধীন, এখনও স্টাবলিশ হয়নি।’
২ হাজার ৩৬ কোটি টাকার ৫৬টি মামলার অভিযোগে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের পরিচালক জায়েদ হোসেন খান ও সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি দল বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
অভিযোগের তিনি দোষী নাকি নির্দোশ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাচ্চু বলেন, ‘এখনও তদন্ত চলছে। অভিযোগ ইস্টাবলিশ হয়নি। কাজেই এখনই এটি বলা মুশকিল।’ চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় টাকা লোপাট হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাচ্চু বলেন, ‘তদন্ত চলছে, দেখা যাক কী হয়।
এদিকে বাচ্চুকে মামলার আসামি করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহামুদ চৌধুরী বলেন, ‘অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন কে আসামি হবে কে হবেন না।’
জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘যেভাবে টাকা লেয়ারিং হয়েছে তা বুঝতে দেরি হওয়ার কারণে সময় বেশি লেগেছে।’
তিনি বলেন, ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকার মধ্যে ৫৫৬ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। এছাড়া রি-শিডিউল হয়েছে ৩ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। টাকা ফেরতের সঙ্গে ক্রিমিনাল লায়াবিলিটির কোনও সম্পর্ক নেই।’
এদিকে এ মামলায় ইতোমধ্যে ব্যাংকের সাবেক পরিচালনা পর্ষদের ১০ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।
উল্লেখ্য, বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে ব্যাংকটির তিনটি শাখায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। গুলশান শাখায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখার ৩৮৭ কোটি টাকা, প্রধান শাখায় প্রায় ২৪৮ কোটি টাকা ও দিলকুশা শাখায় ১৩০ কোটি টাকা অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ শনাক্ত করা হয়। এছাড়া বেসিক ব্যাংকের নিজেদের তদন্তে আরও এক হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি প্রকাশ পায়। বেসিক ব্যাংকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে।