ডেস্ক রিপোর্ট: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা বলেছেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা চলছে। সংবিধান থেকে আমাদের মুছে দেওয়া হয়েছে। আমাদের অস্তিত্বহীন করে ফেলা হয়েছে। পাহাড়ি জনগণ এখন কোথায় যাবে? কোথায় আশ্রয় নেবে?’
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই দশক পূর্তি উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে ডেইলি স্টার ভবনে এক আলোচনা সভায় সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সন্তু লারমা বলেন, বর্তমান সরকার ১৯৯৭ সালের আজকের দিনে এই চুক্তি করেছিল। কিন্তু এই চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের কোনো আন্তরিকতা নেই। চুক্তি বাস্তবায়নের যে দাবি সরকার করছে সেটা আসলে শুভংকরের ফাঁকি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘১৯৯৭ সালে যে চুক্তি হয়েছিল তার লিখিত ও অলিখিত দুটো রূপ ছিল। অলিখিত চুক্তিতে ছিল, পাহাড়ে জিয়াউর রহমান সরকারের সময় যে ৫ লাখ বহিরাগত বাঙালিকে পুনর্বাসন করা হয়েছিল তাদের সমতলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। অথচ কাউকে ফিরিয়ে তো নেওয়া হয়নি বরং প্রতিদিন পাহাড়ে বহিরাগতদের পুনর্বাসন চলছে।’
সন্তু লারমা আরও বলেন, চুক্তির ২০ বছর পর পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ একটি অফিস পর্যন্ত পায়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রেস্টহাউস ভাড়া করে আঞ্চলিক পরিষদকে অফিস করতে হচ্ছে। আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদগুলোকে অথর্ব এবং অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। পুলিশের কনস্টেবল আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের থেকে বেশি ক্ষমতাবান।
জেএসএস-এর সভাপতি বলেন, ‘পাহাড়ি জনগণের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তাদের আর পেছনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখন পাহাড়ের মানুষ প্রতিরোধ করবে। আর প্রতিরোধ করলে সরকার অস্ত্রের ভাষা প্রয়োগ করবে। নিরস্ত্র মানুষের ওপর অস্ত্র দিয়ে হামলা চালালে তাদেরও অস্ত্র দিয়ে উত্তর দিতে হবে।’
ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশ গুপ্ত উপস্থিত আছেন।