নিজস্ব প্রতিবেদক : পাহাড়ে শান্তি নষ্টের পেছনে ‘মতলবি মহলের’ সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে শিল্পকলা একাডেমিতে খেলাঘর কেন্দ্রীয় আসরের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, ‘পাহাড়ে আজও রক্তপাত হলো। শান্তির মধ্যে অস্থিরতা তৈরির জন্য একটা মতলবি মহল সক্রিয়।’ তবে এই মতলবি মহল কারা, সে বিষয়ে সুম্পষ্ট করে বা কোনো ইঙ্গিত দিয়েও কিছু বলেননি সড়ক পরিবহন মন্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাঙামাটির নানিয়ারচর বাজারে মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আহত হন তাকে বহনকারী মোটর সাইকেলের চালক রুপম চাকমাও।
আজ শুক্রবার শক্তিমানের শেষকৃত্যে যোগ দেয়া পাঁচজনকেও গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। দুপুরে উপজেলার সীমান্তবর্তী বেতছড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনার পাশাপাশি আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এটা অনেকের ঈর্ষার কারণ। সোজা পথে পারে না, বাঁকা পথে আসে। আলোতে পারে না, অন্ধকারের আশ্রয় নেয়, রক্তপাতের আশ্রয় নেয়, ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়।’
সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে ডালপালা বিস্তারে যারা সহায়তা করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে, সেই অপশক্তি সক্রিয় বলেও জানান আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, ‘অপশক্তি সক্রিয় বলেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভিসির (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের) বাড়িতে একাত্তরের এর নারকীয়তার পুনরাবৃত্তি হয়।’
কাদের বলেন ‘এটা নির্বাচনের বছর, এ বছর অনেক অঘটন ঘটার পাঁয়তারা আছে, চক্রান্ত আছে। কারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন যখন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়, তখন চোরাগলি দিয়ে ক্ষমতার অলিন্দে প্রবেশ বেড়ে যায়। আমাদের দেশে নানান ঘটনা হচ্ছে।’
বিএনপিকে কাদের বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনে আসেননি বলে গণতন্ত্রের থেমে থাকবে? নির্বাচনী ট্রেন স্টেশন ছাড়বে না? সংবিধান ও গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচন কারো জন্য অপেক্ষা করেনি, এবারও করবে না।’
‘না আসলে না আসুন। বর্জন করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। বর্জন করা আপনার ইচ্ছা, কিন্তু ওই সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করতে পারবেন না। জনগণ প্রতিরোধ করবে।’
ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে কাদেরের কাছে চিরকুটে প্রশ্ন পাঠালে কাদের বলেন, ‘কমিটি করলে অভিযোগ তো আসবেই। আমাদের কাছেও অভিযোগ আসছে। মাথাব্যাথা হলে তো মাথা কেটে ফেলা যায় না। সমাধানের চেষ্টা আছে।’
সংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়ে আক্ষেপের কথা বলেন সড়ক মন্ত্রী। বলেন, ‘সাংস্কৃতিক অঙ্গনে টাকা ছড়াছড়ি। সেখানে পুষ্পিত আদর্শের পতাকা ধারণ করা প্রতিষ্ঠানগুলো বড়ই দুর্দিন। এসব প্রতিষ্ঠানকে সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতার যে যাত্রা আমি শুরু করেছিলাম, সেটা সময়ের চাহিদা মেটাতে আজকে পারছে না। কিন্তু পারা উচিত ছিল।’
‘শিল্পীরা এত কম সম্মাননা পান, সংসার চলে না। যারা মূল্যবোধ নিয়ে এখনও যুদ্ধ করছে, তারাই বেশি কষ্টে আছে।’
খেলাঘর কেন্দ্রীয় আসরের চেয়ারপারসন পান্না কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক সামছুজ্জামান খান, অধ্যাপক নুরুর রহমান সেলিম, কামাল চৌধুরী, অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী, অভিনেত্রী শমী কায়সার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বজলুর রহমান ভাইয়া স্মৃতিপদক তুলে দেয়া হয় অধ্যাপক সামছুজ্জামান খান, কামাল চৌধুরী ও নিরঞ্জন অধিকারীর হাতে।