আজকের প্রভাত প্রতিবেদক : নতুন সদস্য ইস্যুতে তথ্যপ্রযুক্তি সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে চার নেতা পদত্যাগ করেছেন। আজ সোমবার দুপুরে অফিসিয়ালভাবে পদত্যাগ করেন তাঁরা।
পদত্যাগকারীরা হলেন-সহ-সভাপতি নাজনীন কবির, সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান, যুগ্ম সম্পাদক তারিকুর রহমান বাদল এবং প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পাদক এম. মিজানুর রহমান সোহেল।
পদত্যাগপত্রে বলা হয়, সংগঠনে নতুন করে ৩১ জনকে সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে। অথচ সদস্যপদ প্রদান সংশ্লিষ্ট নির্বাহী কমিটির মিটিং থেকে পরদিন পর্যন্ত ১৩ জনের বেশি সদস্যের কাগজপত্র পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানানো হয়। বাছাই কমিটির সুপারিশের পর নির্বাহী কমিটির দায়িত্বই হচ্ছে সুপারিশগুলোর সঠিকতা যাচাই করা, যা করা হয়নি। এছাড়া বাছাই কমিটির বাতিলকৃত ফর্মগুলো খুলেও দেখা হয়নি। যদিও সাধারণ সম্পাদক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কিছুটা যাচাইয়ের চেষ্টা করেন। পরে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকসহ ইসির অন্যান্যরা নতুন সদস্যদের নাম প্রকাশ করার বিষয়ে তাড়াহুড়া না করার জন্য সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে অনুরোধ করেন। কিন্তু তা মানা হয়নি। কেন তাড়াহুড়া করে নাম প্রকাশ করা হলো সে উত্তরও পাওয়া যায়নি। সব কিছু বিবেচনা করে অচেনা মুখ, একই টেলিভিশনে একাধিক সদস্য, টেলিভিশনে আধিক্য সদস্য, বিটের বাইরের সাংবাদিকদের সদস্য করার বিষয়গুলো আমাদের কাছে নীল নকশা মনে হয়েছে।
এ বিষয়ে সহ–সভাপতি নাজনীন নাহার বলেন, বাছাই কমিটির সাথে কথা বলে জানা যায়- সদস্যদের সাংবাদিকতার প্রমাণ হিসেবে সংযুক্ত প্রকাশিত সংবাদের লিংক, টিভি ফুটেজ কিছুই যাচাই করা হয়নি (হার্ডকপিসহ যারা দিয়েছে তাদেরগুলো ব্যতীত)। যাদের সদস্যপদ দেয়া হয়েছে তাদের কোনো ফর্মে কোষাধ্যক্ষের স্বাক্ষর নেই। অথচ কোষাধ্যক্ষের স্বাক্ষরের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ ‘সমর্থক’ ও ‘প্রস্তাবক’ এর স্বাক্ষরের জন্য আলাদা করে সীল বানানো হয়েছে। যারা সংগঠনের সদস্য হতে আবেদন করেছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকাও ইসির কাছে প্রকাশ করা হয়নি। দুইজন আবেদনকারীর নাম তালিকাতেই রাখা হয়নি। তবে যোগ্যদের সদস্য হিসেবে নেয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু যারা যোগ্যতা না থাকার পরেও সদস্য হয়েছেন এবং যারা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বাদ পড়েছেন তাদের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করতে বাধা কোথায়? এই ৩১ জন নিয়ে সভাপতির কিসের ভয়? যোগ্য হলে তো তারা পুনরায় আসতে পারবেন।
মিজানুর রহমান সোহেল বলেন, নতুন সদস্য পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলার দায় না নিতে আমরা পদত্যাগ করেছি। সদস্য গ্রহণের ক্ষেত্রে যে ভুল হয়েছে তা সংশোধনের গতকাল তারিখ নির্ধারণ করা হলেও সেটা আমলে না নেওয়ায় আজ থেকে পদত্যাগ শুরু হয়েছে।
সোহেল বলেন, সভাপতি মহোদয়কে এসব বিষয় অবহিত করা হলেও তিনি সংবিধানের বাইরে এক পাও নড়তে পারবেন না বলে জানান। সংবিধানে বলা হয়েছে, বিআইজেএফ-এর সদস্য হতে হলে দুই বছর আইটি সাংবাদিকতা করতে হবে। অথচ আইটি সাংবাদিকতার বয়স দুই বছর হওয়ার আগে এবং বিশেষত অন্য বিটের সাংবাদিককেও সদস্যপদ দেয়া হয়েছে, যা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। একই সাথে যোগ্য সাংবাদিকদের সদস্য হিসেবে নেয়া হয়নি। যে ৩১ জন সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়েছে তাদের ব্যাপারেও নতুন করে কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেয় বলে জানান সভাপতি।
২০০৩ সালে তথ্যপ্রযুক্তি সাংবাদিকদের নিয়ে এই সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। প্রথম দিকে সব ধরনের গণমাধ্যমের প্রযুক্তিবিষয়ক সাংবাদিক এই সংগঠনের সদস্য হতে পারলেও গত বছর থেকে বিভিন্ন অনলাইন সংবাদমাধ্যম বা সরকার অননুমোদিত সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদকদের সদস্যপদ দেওয়া বাতিল করে নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি করে সংগঠনটি।