আজকের প্রভাত ডেস্ক
মার্কিন ফাস্ট লেডি হওয়াটা মেলানিয়া ট্রাম্পের জন্য নতুন কিছু নয়। ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত হোয়াইট হাউসে মার্কিন ফাস্ট লেডি হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গী ছিলেন মেলানিয়া। যদিও সে সময় খুব একটা তৎপর দেখা যায়নি তাকে। অনেকটা নিজেকে আড়াল করে রাখতেই বেশি পছন্দ করতেন মেলানিয়া। তবে এবার দ্বিতীয়বারের মতো ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ভিন্ন রূপে দেখা যেতে পারে মেলানিয়াকে। তেমনই ইঙ্গিত মিলছে এবার।
স্বামীর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার একদিন পর সোশ্যাল মিডিয়ায় জাতির উদ্দেশ্যে ছোট বক্তব্য দিয়েছেন মেলানিয়া। যেখানে মিসেস ট্রাম্প বলেন, ‘অধিকাংশ আমেরিকানরা আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করেছে। আমরা প্রজাতন্ত্রের হৃদয়কে রক্ষা করব- স্বাধীনতা দিব।’ সেই সঙ্গে মেলানিয়া, আমেরিকানদের দেশের স্বার্থে মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠতে আহ্বান জানান।
মেলানিয়ার বার্তাটি সংক্ষিপ্ত হলেও এর মধ্যে দিয়ে ইঙ্গিত মিলছে, প্রাক্তন ফার্স্ট লেডিকে দ্বিতীয় দফায় ভিন্ন ভূমিকায় সামনে আসতে পারেন।
কেননা, ২০১৬ সালে ট্রাম্প যখন প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তখন শুরুর দিকে হোয়াইট হাউসে আসেননি মেলানিয়া। হোয়াইট হাউসের পরিবর্তে ছোট ছেলের সঙ্গে নিউইয়র্কে থাকতেন। পূর্বেকার ফার্স্ট লেডিদের মতো ঐতিহ্য মেনে কথা বলতেও বাক্য সংযম দেখাতেন মেলানিয়া।
তবে এবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিসেস ট্রাম্প সম্ভবত এবার আরও সুপরিকল্পিতভাবে মার্কিন ফার্স্ট লেডির ভূমিকা পালন করবেন। এবং এ বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আরও সুচিন্তিত হবেন। যদিও ফার্স্ট লেডি হিসেবে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই।
জন্মসূত্রে মেলানিয়ার নাম মেলানিজা নাভস। ৫৪ বছর বয়সী স্লোভেনিয়ান-আমেরিকান এই সাবেক ফ্যাশন মডেল পরিশেষে ম্যানহাটানের ট্রাম্প টাওয়ারের সোনালি দেয়ালেঘেরা চাকচিক্যময় জীবন ছেড়ে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসের আঁটসাঁট রাজনৈতিক জীবনের নিয়ম মেনে নেন। আর সেটা এমন আমলে, যেটা কি না প্রায়ই বিতর্কে আবর্তিত হতো।
কেউ কেউ মেলানিয়াকে ‘রহস্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কেননা, তিনি তার পূর্বসূরিদের তুলনায় কম প্রকাশ্যে আসতে পছন্দ করতেন। তিনি হোয়াইট হাউস ও প্রচারাভিযানে কম বক্তব্য রাখতেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটির যোগাযোগ অধ্যয়নের সহযোগী অধ্যাপক ট্যামি ভিজিল বলেন, তিনি (মেলানিয়া) আধুনিক ফার্স্ট লেডিদের মধ্যে অনন্য। যে কাজ যেমনভাবে করার বাধ্যবাধ্যকতা আছে, সে কাজ নিজের মতো করাটাই তার দস্তুর। তবে তিনি মূল প্রত্যাশাগুলো ঠিকই পূরণ করেন।
যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মেলানিয়া লোকচক্ষুর কেন্দ্রে আসা এড়িয়ে গেছেন। এই সময়কালে তার স্বামী দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার জন্য প্রচার চালান। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। যা তাকে মোকাবিলা করতে হচ্ছিল। ফলে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণাতেও সব সময় থাকতে পারেননি তিনি। যে কারণে মাঝে সংবাদ হয়েছিল মেলানিয়া কোথায়?
মেলানিয়া অবশ্য এরপর ট্রাম্পের প্রচারণায় থাকতে চেষ্টা করেছেন। ট্রাম্পকে হত্যা চেষ্টার পরও ভাষণ দিয়েছেন। যেখানে ঐক্যের আহ্বান জানান তিনি। এবং অপরাধীকে দানব হিসেবে চিহ্নিত করেন।
যা নিয়ে ফক্স নিউজকে একটি বিরল সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন মেলানিয়া। যেখানে তিনি ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও গণমাধ্যমকে দোষারোপ করেন। বলেন, এদের ভূমিকা ট্রাম্পের ওপর আক্রমণ চালাতে উৎসাহ জুগিয়েছে।
এসব কারণে মনে হচ্ছে এবার ভিন্ন রূপে দেখা যাবে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াকে। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ট্যামি ভিজিলও মনে করেন তেমনটি।
তিনি বলেন, মার্কিন ফার্স্ট লেডির ভূমিকা বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে। মেলানিয়া জনসাধারণের মধ্যে কতটা সক্রিয় হতে চান, সে ব্যাপারে তিনি তার সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এবার মেলানিয়া এই কাজ আরও পরিকল্পিতভাবে করবেন।