আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মালয়েশিয়ার বহুল আলোচিত রাজনীতিক আনোয়ার ইব্রাহিম আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই জেল থেকে ছাড়া পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিন বছর আগে সমকামিতার জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত ইব্রাহিমকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করে দিতে রাজি হয়েছেন দেশটির রাজা। মালয়েশিয়ার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ তার অতীত ঘনিষ্ঠ মিত্র আনোয়ার ইব্রাহিমকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, তার রাজনৈতিক মিত্র আনোয়ার ইব্রাহিম- যিনি তিন বছর আগে সমকামিতার জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন- তাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করে দিতে রাজি হয়েছেন দেশটির রাজা।
মাহাথির মোহাম্মদ আরও বলেছেন, তিনি আগামী দুই বছরের মধ্যে পদ ছেড়ে দেবেন এবং তখন আনোয়ার ইব্রাহিমই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন। আনোয়ার ইব্রাহিমের স্ত্রী ইতিমধ্যেই কারাগারে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানা গেছে।
সমকামিতার অভিযোগে আনোয়ার ইব্রাহিমকে দুবার জেলে যেতে হয়- এবং প্রথমবার তার কারাদণ্ড হয়েছিল মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ই। আনোয়ার ইব্রাহিম বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে এবার মাহাথির মোহাম্মদের একটি নির্বাচনী অঙ্গীকারই ছিল যে তিনি আনোয়ার ইব্রাহিমকে মুক্ত করবেন।
নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়ের পর শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রাজা আভাস দিয়েছেন যে তিনি অবিলম্বে ইব্রাহিমকে ক্ষমা করে দেবেন।
মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, এটা হবে সম্পূর্ণ ক্ষমা- যার অর্থ তিনি যে শুধু ক্ষমা পাবেন তাই নয়, সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মুক্তি পাবেন এবং তার রাজনীতি করার ওপরও কোনো বাধা থাকবে না।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, এটা স্পষ্ট যে এই দুই নেতা যাদের মধ্যে অতীতে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্রতা এবং তিক্ত বৈরিতা দুটোই ছিল- তাদের মধ্যে একটা সমঝোতা হয়েছে।
আগামী দুই বছরের মধ্যেই মাহাথির ক্ষমতা আনোয়ার ইবাহিমকে হস্তান্তর করবেন বললেও এখনই তাকে মন্ত্রিসভায় নেয়া হবে কিনা তা তিনি স্পষ্ট করে বলেননি।
গত বুধবারের নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে মালয়েশিয়ায় ছয় দশক ধরে ক্ষমতাসীন বারিসান নাসিওনাল কোয়ালিশনের পতন ঘটেছে।
মাহাথির মোহাম্মদ এবং আনোয়র ইব্রাহিম দুজনেই একসময় এ জোটের সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সময়কার ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ৯২ বছর বয়েসে মাহাথির মোহাম্মদকে অবসর থেকে আবার রাজনীতিতে ফিরিয়ে এনেছে। নির্বাচনে পরাজিত জোটের কয়েকজন নেতা পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বলেছেন, বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের পদত্যাগ করা উচিত। রাজাকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দুর্নীতির মামলা হয়েছে।