আজকের প্রভাত প্রতিবেদক : ওয়ালটন বাজারে ছেড়েছে দেশে তৈরি ৪ মডেলের ল্যাপটপ। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত এই ল্যাপটপ তৈরি হয়েছে গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটনের নিজস্ব কারখানায়। সাশ্রয়ী মূল্যের ল্যাপটপগুলোর দাম মাত্র ১৯ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে ২৩ হাজার ৫৫০ টাকার মধ্যে।
ওয়ালটন কম্পিউটার প্রজেক্ট ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার মো. লিয়াকত আলী জানান, প্রিলুড সিরিজের ওই ল্যাপটপগুলো তৈরি করা হয়েছে শিক্ষার্থী ও তরুণদের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে। আকর্ষণীয় ডিজাইনের ল্যাপটপগুলোর এইচডি ডিসপ্লে, ইন্টেলের প্রসেসর, ৪জিবি র্যাম, ১ টেরাবাইট হার্ডড্রাইভ দেবে অসাধারণ পারফরমেন্স। এছাড়াও ল্যাপটপগুলোতে ব্যবহৃত হয়েছে মাল্টি-ল্যাংগুয়েজ কিবোর্ড। যাতে স্ট্যান্ডার্ড ইংরেজির পাশাপাশি রয়েছে বিল্ট-ইন বাংলা ফন্ট এবং বিজয় বাংলা সফটওয়্যার। ফলে বাংলা ভাষাভাষী যে কেউ অনায়াসেই এই ল্যাপটপ ব্যবহার করে লিখতে পারবেন।
তিনি আরো জানান, সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সঙ্গে পার্টনারশিপ চুক্তি করেছে ওয়ালটন। এই চুক্তির ফলে ওয়ালটন ল্যাপটপে মাইক্রোসফটের জেনুইন সফটওয়্যার পাবেন ক্রেতারা। আগামি মাস থেকে গ্রাহকরা ওয়ালটনের যেকোনো আউটলেট থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে মাইক্রোসফটের জেনুইন উইনন্ডোজ ইন্সটল করে নিতে পারবেন। পরবর্তীতে ওয়ালটনের সব নতুন ল্যাপটপ ও কম্পিউটারেই মাইক্রোসফটের জেনুইন সফটওয়্যার দেয়া থাকবে। যার ফলে এসব ল্যাপটপের কার্যক্ষমতা ও গতি আরো বাড়বে। গ্রাহকের তথ্য ও ডিভাইস থাকবে নিরাপদ।
ওয়ালটন সূত্রে জানা গেছে, দেশে তৈরি ল্যাপটপগুলোর মডেল হলো : ডব্লিউপিআর১৪এন৩৩এসএল (WPR14N33SL), ডব্লিউপিআর১৪এন৩৩বিএল (WPR14N33BL), ডব্লিউপিআর১৪এন৩৪জিআর (WPR14N34GR) এবং ডব্লিউপিআর১৪এন৩৪জিএল (WPR14N34GL)। মডেলভেদে ল্যাপটপগুলোতে ব্যবহৃত হয়েছে ১.১ গিগাহার্জ গতির ইন্টেল অ্যাপোলো লেক এন৩৩৫০ এবং এন৩৪৫০ প্রসেসর। সব ল্যাপটপের ডিসপ্লেই ১৪.১ ইঞ্চির। পর্দার রেজ্যুলেশন ১৩৬৬ বাই ৭৬৮ পিক্সেল। রয়েছে বিল্টইন ইন্টেল এইচডি গ্রাফিক্স ৫০০। সঙ্গে ৪ গিগাবাইট ডিডিআর৩ র্যাম থাকায় প্রয়োজনীয় কাজ কিংবা পছন্দের গেম খেলা যাবে অনায়াসেই।
বেশি সংখ্যক ফাইল, সফটওয়ার, গেম, মুভি ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য সব ল্যাপটপেই এক টেরাবাইট হার্ডডিক্স ড্রাইভের সঙ্গে রয়েছে ৭ মিমি সাটা ইন্টারফেস। ফলে সুযোগ থাকছে আরো বেশি জায়গাযুক্ত হার্ডডিক্স ড্রাইভ ব্যবহারের।
প্রয়োজনীয় পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য এসব ল্যাপটপে ব্যবহৃত হয়েছে ৭.৬ ভোল্ট বা ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি। স্পষ্ট ও জোড়ালো শব্দের জন্য রয়েছে দুইটি বিল্ট ইন স্পিকার। মডেলভেদে রয়েছে ০.৩ এবং ২ মেগাপিক্সেলের এইচডি ক্যামেরা।
কানেকটিভিটির জন্য রয়েছে ২টি করে ইউএসবি পোর্ট, টিএফ কার্ড স্লট, ব্লুটুথ ভার্সন ৪, ওয়্যারলেস ল্যান, এইচডিএমআই পোর্ট, হেডফোন ও মাইক্রোফোন জ্যাক ইত্যাদি।
ল্যাপটপগুলোর ডাইমেনশন ৩২৯.৮/২১৯.৭/২২ মিমি। ব্যাটারিসহ এগুলোর ওজন মাত্র ১.৩৩ কেজি করে। চার মডেলের এই ল্যাপটপ মিলছে রুপালি, কালো, ধূসর ও সোনালি- ভিন্ন চারটি রঙে।
ডব্লিউপিআর১৪এন৩৩এসএল (WPR14N33SL) এবং ডব্লিউপিআর১৪এন৩৩বিএল (WPR14N33BL) মডেলের ল্যাপটপদুটির দাম যথাক্রমে ১৯ হাজার ৯৯০ এবং ২১ হাজার ৫৫০ টাকা। আর ডব্লিউপিআর১৪এন৩৪জিআর (WPR14N34GR) এবং ডব্লিউপিআর১৪এন৩৪জিএল (WPR14N34GL) মডেলের ল্যাপটপ দুটির মূল্য যথাক্রমে ২২ হাজার ৯৯০ এবং ২৩ হাজার ৫৫০ টাকা। সব মডেলের ল্যাপটপে থাকছে ২ বছরের ওয়ারেন্টি।
এর আগে এ বছরের ১৮ জানুয়ারি গাজীপুরের চন্দ্রায় কম্পিউটার কারখানা চালু করে ওয়ালটন। কারখানা উদ্বোধনের এক মাসের মধ্যে ৬ মডেলের ডেস্কটপ পিসি এবং ২ মডেলের ফুল এইচডি মনিটর বাজারে ছাড়ে প্রতিষ্ঠানটি। এবার দেশে তৈরি ল্যাপটপ ছাড়লো ওয়ালটন।
ওয়ালটনের পণ্য ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবুল হাসনাত জানান, নতুন এই চারটি ল্যাপটপ নিয়ে বর্তমানে বাজারে রয়েছে ২১ মডেলের ওয়ালটনের ল্যাপটপ। ভিন্ন ভিন্ন ফিচার ও কনফিগারেশন এসব ল্যাপটপের দাম ১৯ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে ৭৯ হাজার ৯৫০ টাকার মধ্যে। সব মডেলের ল্যাপটপে থাকছে সর্বোচ্চ ২ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সেবা।
এছাড়াও, ওয়ালটনের রয়েছে ছয় মডেলের ডেস্কটপ পিসি। ৩ বছরের ওয়ারেন্টিসহ যেগুলোর দাম ২৩ হাজার ৫৫০ টাকা থেকে ৪৪ হাজার ৯৯০ টাকা। দুই মডেলের মনিটরের একটির দাম ১৩ হাজার ৯৯০ টাকা। অন্যটির মূল্য ৮ হাজার ৫৫০ টাকা।
অন্যদিকে, ওয়ালটনের পণ্যসম্ভারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গেমিং এবং সাধারণ কিবোর্ড ও মাউস এবং পেন ড্রাইভ। সাশ্রয়ী মূল্যের এসব কিবোর্ডের দাম ৩৯০ টাকা থেকে ১৪৯০ টাকার মধ্যে। আর মাউসের দাম ২৫০ টাকা থেকে ৫৯০ টাকার মধ্যে। ১৬ জিবি পেন ড্রাইভের মূল্য ৬৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকার মধ্যে। আর ৩২ জিবির মূল্য ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে।
উল্লেখ্য, মাত্র ২০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ক্রেতারা ১২ মাসের কিস্তিতে কিনতে পারেন সব ধরনের ওয়ালটন ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ। দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে সারা দেশে রয়েছে বিস্তুত সার্ভিস নেটওয়ার্ক।