আজকের প্রভাত রিপোর্ট: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েটে) ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। ছয় দফা দাবিতে তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এর বিপরীতেও রয়েছেন কিছু শিক্ষার্থী, যারা ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাজনীতির পক্ষে। রাজনীতির পক্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কে বা কারা হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকালে বুয়েটের এম এ রশিদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন ছয় শিক্ষার্থী। তারা হলেন ক্যামিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটারিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিক আলম, সাগর বিশ্বাস, অরিত্র ঘোষ ও ২১ ব্যাচের অর্ঘ দাস, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীর স্বপ্নীল ও বিষ্ণুদত্ত চাঁদ।
সংবাদ সম্মেলন আশিকুল আলম বলেন, আমাদের জীবন নিয়ে থ্রেট দেওয়া হচ্ছে। আমরা আজ উপাচার্য স্যারের কাছে সবকিছুর প্রমাণ নিয়ে লিখিত আবেদন করেছি। আমরা ছাড়াও আরও যারা এটার ভুক্তভোগী তাদের নিরাপত্তার খাতিতে তাদের নামও আমরা লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেছি যেন এটি বন্ধ করা হয়।
বুয়েট ছাত্র আরিফ রায়হান দ্বীপকে যখন খুন করা হয় এর আগে তাকে নিয়েও এভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুলিং করা হয়েছিল উল্লেখ করে আশিক বলেন, এরপরও যখন উনি দমছিলেন না তারপর উনাকে নৃশংসভাবে আমাদের বুয়েট প্রাঙ্গণে হত্যা করা হয়। একই কায়দায় আমাদের বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তন্ময় আহাম্মেদ ভাইয়াকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমাদের ক্ষেত্রেও একই জিনিস হচ্ছে। তাই আমরাও উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের থ্রেট এবং বুলিং করা হচ্ছে, তা আমরা নিতে পারছি না। আমাদের মারার মতো হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যারা আমাদের দিচ্ছে তাদের নামসহ আমরা ভিসি স্যারের কাছে দেওয়া লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেছে। আমাদের পাবলিকলি এবং ব্যক্তিগতভাবেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের পরিবারের কাছে ফোন যাচ্ছে- আপনার সন্তানকে দেখে রাখুন, নয়তো পরে পাবেন না। এই কথাগুলোর মানে কি! এই সবকিছুই করা হচ্ছে কারণ আমরা হিজবুত তাহরীর এবং শিবিরের রাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলছি। বাঁশের কেল্লাসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ গ্রুপে আমাদের ছবি পাঠানো হচ্ছে, যার স্ক্রিনশটসহ সব আলামত আমরা লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেছি। সেসব গ্রুপে আমাদের জীবনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলন করছিল তখন কোথাও হিজবুত তাহরীর, শিবির বা ছাত্রদলের নাম উল্লেখ ছিল না বলে দাবি করে তিনি আরও বলেন, শুধু ছিল ছাত্রলীগের ইমতিয়াজসহ আরও যারা সেখানে ছিল তাদের বহিষ্কার চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন কেন তারা শিবির বা হিজবুত তাহরীর নিয়ে কথা বলছে এটা কিন্তু ভাববার বিষয়। আমরাই প্রথম শিবির এবং হিজবুত তাহরীরের পয়েন্ট এনেছি। তারা এখন আমাদের এই পয়েন্ট নিয়ে পুরো আন্দোলনকে ঘুরিয়ে দিতে চাচ্ছে। কয়েকদিন আগে কিছু শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধুর ছবি লাগিয়েছিল। কিন্তু এরও ছয় মাস আগে থেকে আমাদের মুজিব কর্নারের দেয়ালে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবিটি ছেড়া অবস্থায় ছিল। সেটির দেওয়ালের দিকে তাকানোও যাচ্ছে না। পরে আমরা সেই জায়গাটি সংস্কারের আবেদন করেছিলাম ডিএসডব্লিউ স্যারের কাছে। কিন্তু তিনিও আমাদের সেটি সংস্কারের অনুমতি দেওয়ার সাহস করেননি।