নিজস্ব প্রতিবেদক: চিকিৎসা খরচ পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে কোনও ক্লিনিক বা হাসপাতাল মৃত ব্যক্তির লাশ জিম্মি করতে (ধরে রাখতে) পারবে না, এই মর্মে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে গরীব রোগীদের ওই সব অপরিশোধিত বিল পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি রোগী জিম্মি না করার বিষয়টি সার্কুলার জারির মাধ্যমে সব ক্লিনিক বা হাসপাতালকে অবহিত করতে বলা হয়।
সোমবার (২০ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘২০১২ সালের ৮ জুন মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে অসচ্ছল এক ব্যক্তি তার সন্তানকে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে সন্তানটি মারা গেলে ২৬ হাজার টাকার বেশি বিল দাবি করে লাশ হস্তান্তরে হাসপাতালটি অস্বীকৃতি জানায়। পরে এই নিয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হাইকোর্টে রিট দায়ের করে।
সেই রিটের প্রেক্ষিতে আদালত রুল জারি করেন। সেই রুলের নিষ্পত্তি করে আদালত সোমবার (২০ নভেম্বর) রায় ঘোষণা করেন। ’
তিনি বলেন, ‘আদালতের রায়ে চারটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- এক. চিকিৎসা খরচ পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে কোনও ক্লিনিক বা হাসপাতাল মৃত ব্যক্তির লাশ জিম্মি করতে (ধরে রাখতে) পারবে না। দুই. গরীব রোগীদের ওই সব অপরিশোধিত বিল পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তিন. রোগী জিম্মি না করার বিষয়টি সার্কুলার জারির মাধ্যমে সব ক্লিনিক বা হাসপাতালকে অবহিত করতে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চার. সিটি হাসপাতালে ওই শিশুর মৃত্যুর পর তার লাশ দ্রুত হস্তান্তর না করার ব্যর্থতার জন্য এই হাসপাতালকে পাঁচ হাজার টাকা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে দান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।