আজকের প্রভাত প্রতিবেদক : ২০১৭ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। প্রতিবেদনে কোম্পানিটির দৃঢ় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির চিত্র ফুটে উঠেছে। সম্প্রতি চীনের শেনজেন-এ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমাপ্ত বছরে (২০১৭) হুয়াওয়ের মোট বার্ষিক আয় দাঁড়িয়েছে ৯২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৬০৩.৬ বিলিয়ন ইউয়ান), যা ২০১৬ সালের চেয়ে ১৫.৭ শতাংশ বেশি। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৭.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৪৭.৫ বিলিয়ন ইউয়ান), যা আগের বছরের তুলনায় ২8.১ শতাংশ বেশি। এছাড়া একই সময়ে গবেষণা ও উন্নয়ন কাজে হুয়াওয়ে বিনিয়োগ করেছে ১৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৮৯.৭ বিলিয়ন ইউয়ান), যা ২০১৬ সালের তুলনায় ১৭.৪ শতাংশ বেশি। আর গত এক দশকে কোম্পানি গবেষণা ও উন্নয়ন কাজে মোট খরচ করেছে ৬০.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৩৯৪ বিলিয়ন ইউয়ান)।
হুয়েওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান কেন হু বলেন, আমরা এক নতুন যাত্রা শুরু করেছি। আগের তুলনায় আমাদের সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। উন্মুক্ত উদ্ভাবনই আমাদের এই প্রতিযোগিতার দৌঁড়ে সামনে রাখবে। আগামী ১০ বছরে হুয়াওয়ে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়াবে এবং প্রতিবছর গবেষণা ও উন্নয়ন (আর অ্যান্ড ডি) কাজে ১০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করবে। আমরা উন্মুক্ত সহযোগিতা ও শীর্ষ প্রতিভাবানদেরকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাবো এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণা করবো। এছাড়া ২০১৮ সালের মধ্যে বিদ্যমান প্রযুক্তি, যেমন ইন্টারনেট অফ থিংস (আই ও টি), ক্লাউড কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ফাইভ জি’র প্রয়োগ বড় পরিসরে দেখতে পাবো। এই প্রক্রিয়ায় হুয়াওয়ে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং ব্যবসায়িক রূপান্তরের অগ্রগতিতে পথপরিদর্শকের ভূমিকা পালন করবে। একটি বুদ্ধিবৃত্তিক বিশ্ব গড়তে, আমাদের প্রধান কাজ প্রত্যেক ব্যক্তি, বাড়ি এবং সংস্থাকে ডিজিটাল সেবার আওতায় আনা।
বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে হুয়াওয়ে ক্যারিয়ার বিজনেসের মাধ্যমে মোট ৪৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২৯৭.৮ বিলিয়ন ইউয়ান) আয় করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২.৫ শতাংশ বেশি। মূলত ভিডিও, আইওটি ও ক্লাউড মার্কেটে নতুন সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্যারিয়ারসমূহকে হুয়াওয়ে সহায়তা করেছে। হুয়াওয়ের এন্টারপ্রাইজ গ্রুপ ক্লাউড, বিগ ডেটা, ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক, ডেটা সেন্টার, আইওটি এবং অন্যান্য ডোমেইনগুলোর মধ্যে নতুন নতুন উদ্ভাবন বাড়িয়েছে এবং অগ্রসারমান শিল্পপরিসরে ওইসব নতুন নতুন উদ্ভাবনের ব্যাপক প্রয়োগ ঘটিয়েছে।
এছাড়াও ২০১৭ সালে হুয়াওয়ের এন্টারপ্রাইজ বিজনেস ৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৫৪.৯ বিলিয়ন ইউয়ান) আয় করেছে, যা ২০১৬ সালের তুলনায় ৩৫.১ শতাংশ বেশি। কনজ্যুমার বিজনেসের আওতায় ‘হুয়াওয়ে’ এবং ‘অনার’ ব্রান্ড নিজ নিজ ক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে হুয়াওয়ে মোট ১৫৩ মিলিয়ন স্মার্টফোন (অনারসহ) রফতানি করেছে। যা থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে ৩৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২৩৭.২ বিলিয়ন চাইনিজ ইউয়ান), যা আগের বছরের তুলনায় (২০১৬) ৩১.৯ শতাংশ বেশি।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, হুয়াওয়ে ২০১৭ সালে একটি ক্লাউড বিজনেস ইউনিট স্থাপন করেছে, যা ১৪টি ক্যাটাগরিতে ৯৯টি ক্লাউড সেবা এবং ৫০টিরও বেশি সমাধান চালু করেছে। এছাড়াও কোম্পানিটি এন্টারপ্রাইজ ইন্টেলিজেন্স (ইআই) প্ল্যাটফর্ম উন্মোচন করেছে এবং ২০০০ এর বেশি ক্লাউড সেবা অংশীদার তৈরি করেছে।