আজকের প্রভাত প্রতিবেদক : অ্যাডভান্সড ৪.৫জি টেকনোলজি নিয়ে দেশের প্রথম অপারেটর হিসেবে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১০ লাখ ফোরজি গ্রাহকের মাইলফলক অর্জন করেছে বৃহত্তম ফোরজি নেটওয়ার্ক অপারেটর রবি। এ সময়ের মধ্যে ৪ হাজারের বেশি ৪.৫জি সাইট নিয়ে দেশের ৪২৫টি থানায় ৪.৫জি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে অপারেটরটি। এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ২শ’টির বেশি সাইট নিয়ে ৪৫৭টি থানায় রয়েছে রবির ৪.৫জি নেটওয়ার্ক।
দ্রুত গতির এ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ কার্যক্রম গত ২০ ফেব্রুয়ারি সেবাটি চালুর পরপরই শুরু হয়। ওই দিনই দেশের ৬৪টি জেলায় নতুন আসা এই প্রযুক্তিটি চালু করে রবি।
২০১৭ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনামূলক আলোচনা:
২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকে রবির গ্রাহক সংখ্যা ২৭ লাখ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ কোটি ৫৬ লাখে দাঁড়িয়েছে যা দেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ। এ সময় রবি ভয়েস (গত বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ২ শতাংশ বেশি) ও ডেটা (গত বছরের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেশি) উভয় ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি অর্জন করেছে। দেশজুড়ে নেটওয়ার্ক বিস্তৃতি, সক্ষমতা বৃদ্ধি, ফোরজি সেবার জন্য প্রস্তুতির পাশাপাশি অসুস্থ বাজার প্রতিযোগিতা এবং উচ্চ করারোপের নেতিবাচক প্রভাবে এ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে রবির।
২০১৭ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনামূলক আলোচনা :
৪.৫জি নেটওয়ার্ক এবং পণ্য/সেবার প্রসারে পরিচালিত কার্যক্রম সংক্রান্ত ব্যয় সত্ত্বেও ২০১৭ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইবিআইটিডিএ মার্জিন ১ দশমিক ৫ পার্সেন্টেজ পয়েন্ট (পিপি) বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কোটি টাকায়। ৪.৫জি নেটওয়ার্কে বাড়তি বিনিয়োগ এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মার্কেট ইন্টারেস্ট রেটের কারণে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের কর পরবর্তী মুনাফায় (পিএটি) নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়া অব্যাহত উচ্চ করারোপ এবং অসুস্থ বাজার প্রতিযোগিতার কারণে টানা তিন প্রান্তিকে (২০১৭ সালের তৃতীয় ও চতুর্থ প্রান্তিক এবং ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিক) লোকসানের মুখে পড়েছে রবি।
মোবাইল নেটওয়ার্ক অবকাঠামোয় বিনিয়োগ :
গ্রাহকদের আরো মানসম্মত ভয়েস ও ডেটা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৪.৫জি নেটওয়ার্কের দ্রুত সম্প্রসারণ এবং ৩.৫জি/২.৫ জি নেটওয়ার্কের মানোন্নয়নের জন্য ক্রমাগত বিনিয়োগ করে চলেছে রবি। ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকের ৯৯০ কোটি টাকাসহ কোম্পানির কার্যক্রম শুরুর পর থেকে রবি’র মোট মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ ২১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। ১০ হাজার ৭শ’টির বেশি সাইট নিয়ে দেশের ৬৪টি জেলাতেই রয়েছে রবি’র নেটওয়ার্ক যার মধ্যে ৯ হাজার ৩শ’টির বেশি ৩.৫জি সাইট এবং ৫ হাজার ২শ’টির বেশি ৪.৫জি সাইট রয়েছে।
রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের শেষে রবি দেশের প্রথম মোবাইল ফোন ফোন অপারেটর হিসেবে ১০ লাখ ফোরজি গ্রাহকের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এখন প্রায় ২০ লাখ ৪.৫জি গ্রাহকের মাইলফলকের দোরগোরায় আমরা। মার্চের শেষ পর্যন্ত আমরা দেশের ৪২৫টি থানায় ৪ হাজার ৪.৫জি সাইট নিয়ে ৪.৫জি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছি। এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ২শ’টি সাইট নিয়ে ৪৫৭টি থানায় ৪.৫জি সেবা সম্প্রসারণ করেছে রবি।
বাজারে ফোরজি উপযোগী হ্যান্ডসেটের কম থাকায় গ্রাহকদের জন্য আমাদের ই-কমার্স আউটলেট shop.robi.com.bd-এ নিয়ে এসেছি আকর্ষণীয় সব ফোরজি স্মার্টফোন অফার।
২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে উদ্ভাবনী ও সাশ্রয়ী মূল্যের সেবা এনেছি আমরা। অভিভাবকরা যেন তাদের সন্তানদের ইন্টারনেটের ক্ষতিকর কন্টেন্ট থেকে দূরে রাখতে পারেন সে জন্য রবি ‘সেফনেট’ নামে একটি অনন্য সেবা চালু করেছে। দেশে প্রথমবারের মতো ফ্যামিলি হসপিটাল ক্যাশব্যাক অফার ‘মাইহেলথ’ চালু করেছি আমরা। এ অফারের আওতায় গ্রাহক ছাড়া পরিবারের আরো দুই সদস্য এই মেডিকেল কভারেজ’র আওতাভূক্ত হতে পারবেন।
এ প্রান্তিকে রবি’র ডিজিটাল রুপান্তরের ধারা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ক্লাউড-ভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংশ্লিষ্ট প্লাটফর্ম’র মাধ্যমে পরিচালিত বুদ্ধিমান হিউম্যানওয়েড বা সার্ভিস রোবট ‘রবি-সার্ভিসবট’ চালু করেছে রবি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করছে দেশ। আর এ পরিবর্তনের সাথে টেলিযোগাযোগ শিল্পকে খাপ খাওয়াতে এ হিউম্যানওয়েড বা সার্ভিস রোবট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড’র (জেজিটিডিএসএল) সাথে চুক্তির ভিত্তিতে রবি’র বিল পেমেন্ট পোর্টফোলিওকে আরো সমৃদ্ধ করেছি আমরা। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হলে উচ্চগতির ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে রবি।
এমন সব গ্রাহক-কেন্দ্রিত সেবা চালুর পরও অসুস্থ প্রতিযোগীতার কারণে আমাদের কোম্পানির অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এর ফলে লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও এ প্রান্তিকেও ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছি আমরা। অব্যাহতভাবে এমন পরিস্থিতি কাম্য নয়।