সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৫ পৌষ, ১৪৩১

আসাদ পরিবারের শাসন ১২ দিনেই পতন

admin
ডিসেম্বর ৮, ২০২৪ ৪:২০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজকের প্রভাত ডেস্ক
সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের শাসন শুরু হয়েছিল সত্তরের দশকের শুরু থেকে। প্রায় বিনা বাধায় বিদ্রোহী যোদ্ধারা রোববার রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ে; পতন হয়েছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের। যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ গ্রুপ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, একটি ব্যক্তিগত বিমান রাজধানী দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে উড়ে গেছে এবং ‘সম্ভবত এতেই প্রেসিডেন্ট আসাদ ছিলেন’।
দ্যা সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক কর্মসূচির সিনিয়র ফেলো নাতাশা হল বিবিসি রেডিওকে বলেছেন, ‘এটাকে সত্যিকার অর্থেই মনে হচ্ছে যে সিরিয়ায় ৫৪ বছরের স্বৈরশাসনের চূড়ান্ত মূহুর্ত’। বিদ্রোহী ইসলামপন্থি হায়াত তাহরির আল-শামস বা এইচটিএস এর প্রধান ‘ঐতিহাসিক মূহুর্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর দুই সিনিয়র কর্মকর্তা।
গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় আক্রমণ চালিয়ে অনেকটা কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই; মাত্র ১২ দিনে- আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়েছে বিদ্রোহীরা। ১৯৭১ সাল থেকে দেশটির ক্ষমতায় ছিল আসাদ পরিবার।
দুই যুগেও যা সম্ভব হয়নি, মাত্র ১২ দিনের অভিযানে সেই কাজ করে ফেলেছে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো ও হামার দখল নেয় বিদ্রোহীরা। এরপর দখল নেয় আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর হোমসের। অবশেষে আজ তারা দখল নিল দামেস্কের।
জর্ডান সীমান্তের কাছে দক্ষিণ সিরিয়ার দারা অঞ্চলের প্রায় পুরোটা স্থানীয় বিদ্রোহীদের দখলে চলে গিয়েছিল আরও আগেই। এই এলাকাটি ২০১১ সালের আসাদবিরোধী অভ্যুত্থানের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত।
আকস্মিক এই আক্রমণে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী বলতে গেলে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। আসাদের বিরুদ্ধে এই অভিযান পরিচালনা করছে ইসলামপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। সিরিয়ার দীর্ঘ সংঘাতময় ইতিহাসে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এই গোষ্ঠী।
কারা এই হায়াত তাহরির আল-শাম?
২০১১ সালে এইচটিএসের যাত্রা শুরু হয় অন্য একটি নামে। আল-কায়েদার সরাসরি সহযোগী হিসেবে জাবহাত আল-নুসরা নামে যাত্রা শুরু করে গোষ্ঠীটি। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নেতা আবু বকর আল-বাগদাদিও এই গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছিলেন। এরা আসাদবিরোধী লড়াইয়ে অন্যতম কার্যকর ও ভয়ংকর গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
তবে তাদের জিহাদি মতাদর্শ অনেক ক্ষেত্রেই বিপ্লবী মতাদর্শকে ছাপিয়ে যেত। ফ্রি সিরিয়া ব্যানারের আওতাধীন প্রধান বিদ্রোহী জোটের সঙ্গে মাঝে মাঝেই সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হতো তাদের।
২০১৬ সালে গোষ্ঠীটির নেতা আবু মোহাম্মদ আল জোলানি প্রকাশ্যে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এরপর তিনি জাবহাত আল-নুসরাকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন সংগঠন গঠন করেন। সংগঠনটির নাম দেন তাহরির আল-শাম। এক বছর পর এর সঙ্গে একীভূত হয় সমমনা আরও বেশ কিছু গোষ্ঠী।
বেশ কিছু সময় ধরেই উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ইদলিব প্রদেশে শক্ত ঘাঁটি গেড়েছে এইচটিএস। সেখানে কার্যত তারাই স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকায় রয়েছে। যদিও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের কারণে প্রশাসক তাদের বৈধতা আটকে গিয়েছিল।
এছাড়া আরও কয়েকটি গোষ্ঠীর সঙ্গেও অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছে এইচটিএসের।
আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর থেকে এইচটিএস শুধু সিরিয়ায় শাসন তাদের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই এগিয়েছে। আইএসের মতো বৃহত্তর খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেনি তারা।

দৈনিক আজকের প্রভাত

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।