শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ পৌষ, ১৪৩১

জুড়ীতে বন্যায় তলিয়ে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পাঠদান ও পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কা

editor
জুলাই ৩, ২০২৪ ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

এসএম জুবায়ের: মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির ফলে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। বন্যার কারণে মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে। এখনো গ্রামীন অনেক রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে আছে। এরই মধ্যে সরকারি সিদ্ধান্তে গত ২৬ জুন খুলেছে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও বন্যার পানি না কমায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে পারছে না। এরই মধ্যে আগামী তিন জুলাই ঘোষণা করা হয়েছে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন। এ পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কিন্ডার গার্টেন স্কুল, বেসরকারি এনজিও সংস্থার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজ।‌ এছাড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি হাফিজি মাদ্রাসাও বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানা যায়, উপজেলার ৮৩ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ঈদের ছুটি চলছে। ঈদের ছুটি শেষে ৩ জুলাই বিদ্যালয় খোলার কথা থাকলেও পাঠদান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যায় ইতিমধ্যে উপজেলার ১৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তলিয়ে আছে। এছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনো বন্যার্তরা আশ্রয় নিয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বন্যার কারণে মাধ্যমিক পর্যায়ের ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে আছে। সরকারি সিদ্ধান্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোললেও বন্যার কারণে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী আসতে পারছেন না। ফলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি এহসান বিন মুজাহির জুড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে ৩০ টি বেসরকারি কিন্ডার গার্টেন বন্ধ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন।
জুড়ী উপজেলার কালনীগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশীষ দাশ বলেন, বন্যার কারণে বেশ কয়েকটি পরিবার বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ৩ জুলাই থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরুর কথা থাকলেও বিদ্যালয়ের নিচতলার শ্রেণিকক্ষে পানি থাকায় পাঠদান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার মক্তদীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসহাককে আলী বলেন, অতিবৃষ্টি পাহাড়ি ঢলে এ উপজেলার প্রায় সব নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমাদের বিদ্যালয়টিকে ইতিমধ্যে সরকার বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে। বন্যার্তরা বিদ্যালয়ের দু-তলা ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের ‌শ্রেণিকক্ষ ও মাঠে পানি থাকায় পাঠ দান ও পরীক্ষা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও জায়ফরনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতীশ চন্দ্র দাশ বলেন, গ্রামীন সড়ক, মানুষের বাড়িঘর ও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসতে পারছেন না। এ অবস্থায় পাঠদান ও পরীক্ষা নিয়ে আমরা চিন্তিত। বন্যার বিষয়টি চিন্তা করে পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানান এ শিক্ষক নেতা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার দিলীপময় দাশ চৌধুরী বলেন, উপজেলার ৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বন্যার কারণে ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে আছে। তলিয়ে থাকা সরকারি প্রাথমিক এসব বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ থাকবে।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ আলাউদ্দিন বন্যার কারণে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ১৪ টি প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ও পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৌলভীবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা বিদ্যালয়ের তালিকা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। মাউশি সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ সহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন বলেন, জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অবিরত বৃষ্টির কারণে পানি আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial