ডেস্ক রিপোর্ট: রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করায় বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এ তালিকা প্রকাশ হওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের হেনস্তা করার কথা বলছেন। তার বাবা কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন বলেই তিনি এমনটি বলছেন।’
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে তিনি এই অভিযোগ করেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিজয়ের মাসে বর্তমান সরকার ৪৮ বছরের আকাঙ্ক্ষিত প্রায় ১১ হাজার রাজাকার, আলবদর, আলশামসের তালিকা প্রণয়ন করেছে। ধারাবাহিকভাবে সব স্বাধীনতাবিরোধীর তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন বিজয়ের ঊষালগ্নে শহীদ স্মৃতিসৌধে ৩০ লক্ষ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি এই অপরাধী আর জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা ওরা কী কথা বলছে! মির্জা ফখরুল বলেছেন, এই রাজাকারের তালিকা নাকি বিএনপিকে হেনস্তা, পর্যুদস্ত করার জন্য করা হয়েছে।’
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাহলে কি মির্জা ফখরুল আপনি মেনে নিলেন আজকের বিএনপি-রাজাকার দ্বারাই পরিচালিত হয়? তবে এটাও সত্য, মির্জা ফখরুল, আপনি মির্জা রুহুল আমিনের সন্তান। মির্জা রুহুল আমিন ঠাকুরগাঁওয়ের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ছিলেন, তার রক্তের উত্তরাধিকারী আপনি। আপনার মুখে তো রাজাকারদের পক্ষে কথা বের হবেই, এটাই স্বাভাবিক। কারণ, এখনও আপনি বিএনপির মহাসচিব।’
বিএনপি প্রতিষ্ঠা থেকেই রাজাকারদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে দাবি করে আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘শাহ আজিজ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আব্দুল আলীমদের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মন্ত্রী বানিয়েছেন। নিজামী, মুজাহিদকে মন্ত্রিত্ব দিয়েছিলেন আপনার নেত্রী খালেদা জিয়া। আপনি এই লাইনে কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা বলতে চাই এই বিজয়ের মাসে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই বাংলার মাটিতে কোনও ধরনের যুদ্ধাপরাধীদের ঠাঁই হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পূর্বসূরিরা জীবন দিয়ে আমাদের জন্য রাষ্ট্র তৈরি করে গেছেন। আমরা তাদের কাছে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, জীবন দিয়ে হলেও আমরা সেই ঋণ পরিশোধ করবো। বঙ্গবন্ধুর রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলতে চাই, এই বাংলাদেশের কোথাও যুদ্ধাপরাধীদের জায়গা হবে না। বাংলাদেশের কোথাও তারা রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না। বাংলাদেশের মানুষ তাদের গ্রহণ করবে না।’ এরকম একটি বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বোচাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সৈয়দ হোসেনের সভাপতিত্বে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকউজ্জামান চৌধুরী মাইকেল, মির্জা আশফাক, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী ও বোচাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার আলী বক্তব্য রাখেন।