ডেস্ক রিপোর্ট: অপরাধ বিষয়ক মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন ও মিথ্যা মামলা করে বিভ্রান্ত ও হয়রানির করার অভিযোগে কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার ও তার স্ত্রী মানবাধিকার কর্মী ফরিদা আক্তারের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় মামলা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার মামলার বাদীর নারাজি দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম এ আদেশ দেন। আদেশ অনুসারে রাজধানীর আদাবর থানায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলাটি দায়ের করবেন।
আদেশ বিষয়ে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা আদাবর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দীন জানান, চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিষয়ে বাদীর নারাজি ও সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন আদালত। একই সঙ্গে বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য এবং হয়রানির অভিযোগে দণ্ডবিধির ২১১ এবং ১০৯ ধারায় ফরহাদ মজহার ও তার স্ত্রী ফরিদা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার জন্য দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় ২ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় প্রকারের শাস্তির বিধান রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘মামলাটি ডিবি তদন্ত করেছে। তারা আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে। আদালত এই ঘটনায় থানায় মামলা করার আদেশ দিয়েছে। আদালতের আদেশের কপি হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মাহাবুবুল ইসলাম আদালতে ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ তদন্তে সত্য প্রমাণিত হয়নি মর্মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। একইসঙ্গে মিথ্যা অপহরণের মামলা করে বিভ্রান্ত ও হয়রানি করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় ফরহাদ মজহার ও ১০৯ ধারায় তার স্ত্রী ফরিদা আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমতি চান তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তার দাবি, তদন্তকালে বিভিন্ন জনের জবানবন্দিসহ অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণ বলছে, ফরহাদ মজহার অপহরণ বিষয়ে সত্য তথ্য দেননি। তার স্ত্রী ফরিদা আক্তার অপহরণের মিথ্যা অভিযোগ করেন। তার স্ত্রী মিথ্যা অভিযোগ করলেও পরবর্তীকালে তা প্রত্যাহার করেনি।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই ভোররাতে মোহাম্মদপুর লিংক রোডের হক গার্ডেনের নিজ বাসা থেকে বের হন ফরহাদ মজহার। এরপর ভোর ৫টা ২৯ মিনিটে তিনি তার স্ত্রীকে ফোন করে জানান, ‘ফরিদা, ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ পরে তার স্ত্রী আদাবর থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাতে র্যাব-৬ যশোর নওয়াপাড়া থেকে তাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে আদাবর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর তাকে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ফরহাদ মজহার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তার স্ত্রীর করা যে জিডিটি মামলা আকারে নেওয়া হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিম হিসেবে ফরহাদ মজহার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দেন।