এসএম জুবায়ের: মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণভাবে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তবে এ উপজেলা দ্বিতীয় দফা বন্যা কবলিত হওয়ায় সকালে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে চরম দুর্ভোগে পড়েন। এসময় শিক্ষার্থীদের জামা কাপড় ভিজিয়ে হাটু পানি মাড়িয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হয়। বন্যার পানিতে দুর্ভোগে পড়ে অবিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানান।
জানা যায়, সারা দেশে ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও বন্যার কারণে সিলেট বিভাগের পরীক্ষা পেছানো হয়। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) আইসিটি পরীক্ষার মাধ্যমে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জুড়ী উপজেলার ৪ টি কলেজ থেকে মোট ১২৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করছে। জুড়ী উপজেলা দ্বিতীয় দফা বন্যা কবলিত হওয়ায় তৈয়ুবুন্নেছা খানম সরকারি কলেজ কেন্দ্রের সামনের জুড়ী টু লাঠিটিলা আঞ্চলিক মহাসড়কে পানি থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। সকালে কেন্দ্রে পৌঁছতে শিক্ষার্থীরা বন্যার পানিতে ভিজে কেন্দ্রে পৌঁছতে হয়। উপজেলার চারটি কলেজের মধ্যে তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজ থেকে ৮১৯ জন, হাজী আপ্তাব উদ্দিন আমিনা খাতুন কলেজ থেকে ১৬৬ জন, ফুলতলা শাহ্ নিমাত্রা কলেজ থেকে ১৮৬ জন এবং শিলুয়া স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৬২ জন পরীক্ষার্থীসহ মোট ১২৩৩ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করছে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্র পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা আক্তার।
সরজমিনে ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বন্যায় এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের পরবর্তী আজ প্রথম তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা শুরু হয়। সকালে বৃষ্টির পানিতে ভিজে তাঁরা কেন্দ্রে যান। এখন আবার ভিজে বাড়িতে যাচ্ছেন। এসময় শিক্ষার্থীরা আরো জানান বন্যার কারণে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফরহাদ আহমদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় ইউ’পি চেয়ারম্যান বালুর বস্তা ফেলে কলেজের সামনের নিচু সড়কটি উঁচু করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। পরবর্তী পরীক্ষা ১১ জুলাই। এর মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১ হাজার ২৩৩। দুটি ভেন্যুতে পরীক্ষা হচ্ছে। তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজ ভেন্যুতে বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষা চলছে। প্রথম দিনের পরীক্ষায় ১৩ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার জানান, এইচএসসি পরিক্ষার ভেন্যু সেন্টার মক্তদীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যার পানি থাকায় সেটিকে পরিবর্তন করে তৈয়বুন্নেছা সরকারি কলেজের পুরাতন ভবনে নেওয়া হয়েছে। সড়কে বন্যার পানি থাকায় শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়েছে স্বীকার করে এ কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষা সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে নিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ইউএনও লুসিকান্ত হাজং জানান, সকালে তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। কেন্দ্রের সম্মুখে বন্যার পানি থাকায় শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা চিন্তা আগামী পরীক্ষার আগেই শিক্ষার্থীরা যাতে পানিতে না ভিজে কেন্দ্রে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।