ডেস্ক রিপোর্ট: সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে বাংলাদেশ সফলতার ধারায় রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন প্রায় ৭২ বছর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস-২০১৮ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আগামী ৭ এপ্রিল বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হবে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা : সবার জন্য, সর্বত্র’।
স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০০ সালে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬৫.৫ বছর। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৭১.৮ বছর। বর্তমান সরকারের নানামুখি পদক্ষেপের কারনে এই সফলতা এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ফয়েজ আহম্মেদ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। জাহিদ মালেক বলেন, দেশে ১৮ থেকে ২২ শতাংশ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বাস করে। দরিদ্র সীমার এই তারতম্যের অন্যতম কারণ স্বাস্থ্য সেবায় ব্যয় বৃদ্ধি। স্বাস্থ্য ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব হলে দেশে দরিদ্র সীমার মাত্রা কমে আসবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের অতি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুবিধা গ্রহণের সুযোগ নেই। পৃথিবীর ৮০ কোটি মানুষ তাদের পরিবারের মোট ব্যয়ের অন্তত ১০ শতাংশ চিকিৎসাসেবা গ্রহণের খরচ নিজেদের পকেট থেকে বহন করে এবং বছরে প্রায় ১০ কোটি মানুষ চিকিৎসা সেবার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অতি দরিদ্র হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, দেশে স্বাস্থ্য সেবা নিতে গিয়ে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় এর ৬৭ শতাংশই রোগীকে বহন করতে হয়। এই খরচের ৪০ শতাংশেরও বেশি অর্থ ব্যয় হয় ওষুধ ক্রয়ে। স্বাস্থ্য ব্যয় কমিয়ে আনতে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ জরুরি। রোগী এবং চিকিৎসকের স্বার্থ সুরক্ষায় সরকার ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন’ করছে। যা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যেই আইনটি কেবিনেটে উঠবে।
জাহিদ মালেক বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জন করতে হলে ২০২৩ সালের মধ্যে পৃথিবীর আরো ১০০ কোটি মানুষকে অতি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং চিকিৎসাসেবার ব্যয় বহন করতে গিয়ে বছরে যে প্রায় ১০ কোটি মানুষ অতি দরিদ্র হয়ে পড়ছে তার সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সেমিনার আয়োজন, জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, স্মরণিকা প্রকাশ, টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠান, সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ, প্রেস বিফ্রিং, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, জারীগান, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর আলোচনা অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ বছর জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঢাকাস্থ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য জেলা ও উপজেলায়ও বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হবে।