নিজস্ব প্রতিবেদক: আরও ২৫ বছরের জন্য জাতীয় সংসদের ৫০টি আসন কেবল মহিলা সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত রাখার বিধান যুক্ত করতে সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন- ২০১৮ বিল নামে একটি বিল সংসদে উত্থাপিত হয়েছে।
১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রথম সংসদে ১০টি নারী আসন সংরক্ষিত রাখার বিধান যুক্ত হয়। পরে আরও চারটি সংশোধনীর মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে নারী আসনের মেয়াদ ও সংখ্যা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ১০ বছরের জন্য নারী আসন সংখ্যা ৫০ করা হয়। চলতি সংসদের মেয়াদান্তে এই বিধান অব্যাহত রাখতে প্রস্তাবিত সংশোধনী বিল আনা হয়।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। বিলটি উত্থাপনের বিরোধিতা করেন স্বতন্ত্র এমপি রুস্তম আলী ফরাজী। পরে কণ্ঠভোটে তা নাকচ হয়। পরে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিলটি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় সংশোধনী এনে সংরক্ষিত আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বাড়ানো হয়।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় আইন প্রণয়নে মহিলাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সেই সময় গণপরিষদ প্রণীত ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদ এর বিধানে জাতীয় সংসদে মহিলা সদস্যদের জন্য সংবিধান প্রবর্তনের সময় হতে পরবর্তী ১০ বছরের মেয়াদে ১৫টি নারী আসন সংরক্ষিত রাখার বিধান যুক্ত হয়।
পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে ১৫ বছরের জন্য সংসদে মহিলা সদস্যদের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ করা হয়। ১৯৯০ সালে সংবিধানের দশম সংশোধনীর মাধ্যমে আরও ১০ বছরের জন্য ৩০ জন মহিলা সদস্যদের আসন সংরক্ষণ করা হয়।
২০০৪ সালে চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে আরও ১০ বছরের জন্য আইনটি অব্যাহত রাখা হয় এবং মহিলা সদস্যদের আসন বাড়িয়ে ৪৫ জন করা হয়। ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পরবর্তী ১০ বছরের জন্য আইনটি অব্যাহত রাখা হয় এবং মহিলা সদস্যদের আসন বাড়িয়ে ৫০ করা হয়। সে অনুযায়ী ৩৫০ জন সংসদ সদস্য নিয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সংখ্যানুপাতে (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের হার পদ্ধতিতে) সংসদের সংরক্ষিত আসন বণ্টন হয়। সর্বশেষ এই বিধানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি। সে কারণেই সংসদে নারী আসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে এই সংশোধনী আনা হয়।