News update
  • গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর আরও জোর দেওয়ার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান     |     
  • আহ্বায়ক টিএইচএম জাহাঙ্গীর ও সদস্য সচিব বিল্লাল হোসেন     |     
  • মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গর্ভনরেরা     |     
  • শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি' আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ      |     
  • দেশে বছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে- ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতামত      |     
খবর 2025-12-12, 3:43pm

আজ ১২ ডিসেম্বর ঘিওরে হানাদার মুক্ত দিবস


আব্দুল আজীম, ঘিওর (মানিকগঞ্জ ) প্রতিনিধি: আজ ঐতিহাসিক ১২ ডিসেম্বর। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ঘিওরের সকল মুক্তিযোদ্ধদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশ মাতৃকার লড়াইয়ে নিয়োজিত অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনবাজি রেখে মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে দাঁরিয়ে দখলদার পাকিস্থানি বাহিনীকে হটিয়ে ঘিওরকে শত্রুমুক্ত করে। হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় ঘিওর উপজেলা। তাই আজও এ দিনটি ঘিওরবাসীর কাছে স্মরণীয় ঘটনা। গৌরবোজ্জ্বল শ্রেষ্ট এক স্মৃতি। 

জানা গেছে, জেলার ঐতিহ্যবাহী ঘিওর ছিল একটি গুরত্বপূর্ন এলাকা। শিক্ষা,সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের আনাগুনা ছিল ব্যাপক ভাবে। ১১ ডিসেম্বর শতাধিক পাকসেনারা উপজেলার নিলুয়া, শোলাকুড়া, ধুসর,পয়লা,নয়াবাড়ি, মোল্লাবাড়ি, এলাকা ঘিরে ফেলে। কাক ডাকা ভোরে চার দিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পাকহানাদার বাহিনী এদেশীয় দোসর , রাজাকার, আলসামস, পিস কমিটির সদস্যরা এলাকার অসংখ্য ঘরবাড়ি,জ্বালিয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করে। এমনকি এ বাহিনীর তান্ডবে এলাকার শত শত মানুষ ভয়ে জঙ্গলে গর্তে পালিয়ে থাকে। হানাদারদের অত্যাচার ও নির্য়াতন থেকে রক্ষা পেতে দেশ প্রেমিক মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধিকার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আমাদের ক্যাম্পে খবর পাবার পরে ৭০/৮০ জন মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে হানাদার বাহিনীদের আক্রমন করি। পাকসেনাদের সাথে ৬/৭ ঘন্টা যুদ্ধ হয়। এক পর্যায়ে প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে হানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকে। পরে ঘিওরের মাইলাগি গ্রামের ভীতর দিয়ে বালিয়াখোড়া গ্রাম হয়ে তারা বালিরটেক দিয়ে সিংগাইর হয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার প্রয়াত মনসুর আলম খান মারাত্মক আহত হয়।

 ১২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার সময় সকল মুক্তিযোদ্ধারা সমবেত আনন্দ উল্লাস করে। শত দুঃখ কষ্ট ও আত্নত্যাগের পর বিজয়ের আনন্দঘন এক মুহুর্ত। পাকসেনারা ঘিওর ছেড়ে পালিয়েছে আর মুক্তিযোদ্ধারা ঘিওরে আসতে শুরু করেছে এ খবর ছড়িয়ে পরলে মুক্তিকামী জনতারা আনন্দে সারা এলাকা কম্পিত হয়ে পরে।মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে গ্রামের মানুষ বেরিয়ে আসেন। সূর্যোদয়ের মতো আভা ছড়িয়ে বিস্তৃত করেছিল অসীম আনন্দ উৎসবে। তাদের কাধেঁ তাদের উদ্যত রাইফেল, হাতে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত রক্ত লাল সূর্য সংবলিত গাঢ় সবুজ জমিনের পতাকা। চোখে মুখে বিজয়ের হাসি। এ যেন বন্দিত্ব মোচনের সূপ্রভাত। পরে সকল মুক্তিযোদ্ধারা ঘিওর থানা চত্বরে স্বাধীন বাংলার প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। 

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আঃ মান্নান বলেন, অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে মুক্তিযোদ্ধের চেতনা ব্যতিত অন্য কোন বিকল্প নেই। তবে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় সেই রনাঙ্গনের বীরত্বগাথা স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা মনে পরলে আজও শরীর শিহরে উঠে।