নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্বৃত্তের হামলায় আহত শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আনা হয়েছে। গতকাল রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়।
বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. জাফর ইকবালের মাথা, বাম হাত ও পিঠসহ শরীরে ২৬টি সেলাই লেগেছে বলে জানিয়েছেন ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুল হক চৌধুরী। জাফর ইকবাল এখন আশঙ্কামুক্ত বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল (৩ মার্চ) রাতে ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুল হক বলেন, ‘জাফর ইকবালের মাথায় আঘাত করেছে হামলাকারী। তার মাথায়ও কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া তার বাম হাত ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকদের ধারণা, জাফর ইকবালের মাথা, বাম হাত ও পিঠে রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আঘাতগুলো খুবই মারাত্মক।’ বাম হাত ও পিঠেও ছুরিঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাহবুবুল হক বলেন, ‘অনেক বড় বিপদ থেকে জাফর ইকবাল রক্ষা পেয়েছেন।’
উল্লেখ্য, শনিবার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান চলাকালে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে পেছন থেকে মাথায় ছুরিকাঘাত করে ২৪-২৫ বছর বয়সী এক তরুণ। এরপর তাকে সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরই মধ্যে সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়েছে। এর আগে, তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. দেবপদ রায়।
এদিকে, ড. জাফর ইকবালের হামলাকারীকে আটক করা হলেও তার পরিচয় জানা যায়নি। হামলাকারী তরুণকে র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি দল সিলেট যাচ্ছে। সিটিটিসি সূত্র জানিয়েছে, অতীতে বিভিন্ন সময় ড. জাফর ইকবালকে বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর দেওয়া হুমকির বিষয়টি মাথায় রেখে ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকেও নিন্দা জানানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ‘এ’-এর সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগেও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণজাগরণ মঞ্চ।