আয়ের চেয়ে সম্পদের বৈষম্য শতভাগ বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: উন্নয়নে বৈষম্য বেড়েছে। তবে আয় বৈষম্যের চেয়ে সম্পদের বৈষম্য শতভাগ বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, কাউকে পেছনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন সম্ভব হবে না। একই সঙ্গে বাড়াতে হবে জবাবদিহিতাও।
‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে কাউকে পেছনে রাখা যাবে না’ প্রতিপাদ্যে আগামী ৬ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ‘নাগরিক সম্মেলন ২০১৭ : বাংলাদেশ এসডিজি বাস্তবায়ন’। নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করবে। রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ উপলক্ষে প্রাক সম্মেলন মিডিয়া ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, উন্নয়নে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া এবং কাজ করার সঙ্গে কাজের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকতে হবে, সমাজের কণ্ঠস্বর উচ্চারিত না হলে বাস্তবায়নের পরেও প্রকৃত উন্নয়ন হয় না। সেজন্য বাস্তবায়নের পাশাপাশি জবাবদিহিতার বিষয়ে শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার বাস্তবায়নে স্বাক্ষর করে, অর্থ বরাদ্দ দেয়। এরপরেও যদি জনগণের কণ্ঠস্বর উচ্চারিত না হয় তবে সে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ন্যায়বিচার, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জবাবদিহিতা থাকতে হবে। তিনি বলেন, ২০১০-১৬ পর্যন্ত আয়ের বৈষম্য যেমন বেড়েছে তার চেয়ে বেশি বেড়েছে সম্পদের বৈষম্য।
নাগরিক সম্মেলন নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কারা পিছিয়ে আছে সম্মেলনে তাদের নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। বৈশিক কর্মসূচির আলোকে আমাদের চিন্তা ভাবনা বিতর্ক থাকবে। প্রেরণা চিত্র প্রদর্শন করা হবে। বেসরকারি
সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের আয়ের উৎস, জীবন চক্র কোথায় আছে, তাদের অবস্থান শহর বা গ্রাম নিয়ে আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া লিঙ্গ, পেশা, ধর্ম বৈষম্য তাকে পিছিয়ে রাখছে কি-না সে বিষয়েও আলোচনা হবে।
দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এসডিজি বাস্তবায়ন সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের একার পক্ষে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এজন্য নাগরিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার, নাগরিক সবাইকে সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, রিকশাওয়ালা বা বাল্যবিয়ের শিকার স্কুলে না যাওয়া মেয়েরা কি জানে এসডিজি কি? অথচ সবাইকে সংগে নিয়ে এগুতে হবে। এজন্য সবাইকে সচেতন করতে হবে, জানাতে হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাকে কার্যকর ও দৃশ্যমান করাসহ এসডিজি অভিষ্টগুলোর তাৎপর্য সম্পর্কে দেশব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কোনোভাবেই যেন এসিডিজি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সুফল থেকে বঞ্চিত না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top