এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান-এমডিসহ ১২ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের (এবি) সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফজলার রহমানসহ ১২ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিদেশে ২০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের সাথে ওই কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে দুদক ওই চিঠি দিয়েছে বলে দুদক সূত্র জানায়।
তালিকায় ওই দুজন ছাড়াও ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামিম আহমেদ চৌধুরী এবং হেড অব ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড ট্রেজারি আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ পরিচালনা পর্ষদের বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষর করা চিঠিতে ১২ কর্মকর্তার নামের তালিকা দিয়ে তারা যাতে বিদেশে যেতে না পারেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে এম ওয়াহিদুল হক ও ফজলার রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের পাসপোর্ট জব্দ করে দুদকের অনুসন্ধান টিম। তাদের বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
দুদক সূত্রে জানা যায়, আরব আমিরাতে (দুবাই) ২০ মিলিয়ন পাচারের ঘটনায় সত্যতা স্বীকার করেন সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডি। তবে এর সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তারা পরিস্থিতির শিকার বলে দাবি করেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, পিজিএফ নামের দুবাইভিত্তিক একটি কোম্পানির সাথে চুক্তি করে ২০ মিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে দেয়ার কথা বললেও ওই কোম্পানির কোনো কর্মকর্তাদের নাম বা পরিচয় কাগজপত্রে দেখাতে পারেনি এবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বরং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই টাকা ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেছে। তিন কিস্তিতে ওই টাকা দুবাই যাওয়ার পর ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্র। পরবর্তীকালে যার কোনো তথ্য এবি ব্যাংকের নিকট নেই। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে খুররাম ও আবদুস সামাদ নামের দুই ব্যক্তি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। এ ছাড়া দুদক ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার একাধিকবার দুবাই যাতায়াতের প্রমাণ পেয়েছে।
অর্থপাচারের ঘটনায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর ও ২ জানুয়ারি ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থানা পরিচালক শামিম আহমেদ চৌধুরী, হেড অব ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড ট্রেজারি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হেড অব করপোরেট মাহফুজ উল ইসলাম, হেড অব অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমান, ওবিইউর কর্মকর্তা মো. আরিফ নেওয়াজ, ব্যাংক কোম্পানি সেক্রেটারি মাহদেব সরকার সুমন এবং প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা এম এন আজিমকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top