কিমের সফরের স্বীকারোক্তি দিলো চীন ও উত্তর কোরিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একদিন গুজব চলার পর অবশেষে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের চীন সফর নিশ্চিত হওয়া গেছে। চীন ও উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে দেশের নেতা হিসেবে কিমের প্রথম বিদেশ সফরের বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। এর আগে জাপানের সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, উত্তর কোরিয়ার উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা ট্রেনে করে বেইজিং পৌঁছেছেন। কিছুদিন আগে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষায় চীন একাধিকবার তাদের অসন্তোষের কথা জানায়। পাশাপাশি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন দেয় বেইজিং। এতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে জাপানি সংবাদ সংস্থা কিয়োদো জানায়, বেইজিং ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের লক্ষ্যে ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার চীন সফরের আয়োজন করা হয়। নিপ্পন টিভির মালিকানাধীন জাপানি সংবাদমাধ্যম নিপ্পন নিউজ নেটওয়ার্কে দেখানো ভিডিওতে একটি হলুদ দাগকাটা সবুজ ট্রেন দেখা যায়। ২১ বগিবিশিষ্ট এমন একটি ট্রেনে করেই ২০১১ সালে উনের বাবা দ্বিতীয় কিম জং বেইজিং সফর করেছিলেন। ব্লুমবার্গের খবরে দাবি করা হয়, ট্রেনে করে বেইজিংয়ে পৌঁছানো ওই কর্মকর্তা কিম জং উন। তারা বলছেন, ২০১১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই কিম জং উনের প্রথম বিদেশ সফর। কিন্তু তখন এই সফরের উদ্দেশ্য বা অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেনি ব্লুমবার্গ।
বুধবার চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ঝিনহুয়া জানিয়েছে, কিম জং উন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সংঙ্গে সফল সংলাপ করেছেন।
খবরে বলা হয়েছে, সফরকালে পরমাণু অস্ত্র ত্যাগের ব্যাপারে কিম চীনের প্রেসিডেন্টকে আশ্বস্ত করেছেন। তবে এতে তিনি কিছু শর্তের কথা বলেছেন।
কিমকে উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়, ‘কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ সমস্যার সমাধান সম্ভব, যদি দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র আমাদের প্রচেষ্টায় সদিচ্ছায় সাড়া দেয় ও শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি করে। এজন্য শান্তি প্রচেষ্টায় উন্নতশীল ও যুগপৎ পদক্ষেপ নিতে হবে।’
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ এই সফরকে চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে ‘মাইলফলক’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
খবরে বলা হয়, কিম তার স্ত্রী রি সোল জু’কে নিয়ে রবিবার বেইজিং পৌঁছান। আর মঙ্গলবার বিকালে তিনি দেশের উদ্দেশে রওনা হন। এ বছরের শুরুতে শীতকালীন অলিম্পিকের সময় উত্তর ও  দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক অগ্রগতির সর্বশেষ পদক্ষেপ হলো কিমের এই চীন সফর।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এই সফরের ব্যাপারে মঙ্গলবার চীনের পক্ষ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।  হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব সারাহ হুকাবি সান্ডার্স বলেন, ‘আমরা এই উন্নতিকে আমাদের প্রচারণার আরেকটি প্রমাণ হিসেবেই দেখছি। সর্বোচ্চ চাপ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপের সঠিক পরিবেশ তৈরি করছে।’
ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে কয়েক মাসের শত্রুতার পর গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিমের সঙ্গে এক অভূতপূর্ব বৈঠকের প্রস্তাব গ্রহণ করেন। এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে ট্রাম্পই হবেন উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে বৈঠককারী প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top