জাহিদুল ইসলাম, জবি প্রতিনিধি: কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে পড়ে দুই পা হারানো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সমাজকর্ম বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রুবিনা আক্তারের চিকিৎসার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার সকালে আহত শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে দেখতে যান জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।
ড. মীজান এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অর্থোপেডিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা.শাহীন এর সাথে কথা বলেন এবং সুচিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে সকল দায়িত্ব গ্রহন করেন । জবি প্রশাসনের দায়িত্ব নেবার বিষয়টি দৈনিক আজকের প্রভাত সংবাদাতাকে নিশ্চিত করেন প্রতিনিধি দলের সদস্য জবি সহকারী প্রক্টর ড.মোস্তফা কামাল।তিনি বলেন, ‘ আহত শিক্ষার্থীর সকল দায়িত্ব উপাচার্য মহোদয় নিয়েছেন এবং দায়িত্বরত ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছেন তার বিচ্ছিন্ন পা লাগানো সম্ভব।’
এদিকে আহত শিক্ষার্থীকে সকল প্রকার আর্থিক সহযোগীতা করার বিষয় টি নিশ্চিত করেছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক।জবি শাখা ছাত্রলীগের একটি প্রতিনিধি দল মন্ত্রীর সাথে দেখা করলে মন্ত্রী তার সুচিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।জবি ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন ,‘ রেল মন্ত্রী রুবিনার চিকিৎসার সকল দায়িত্ব নিয়েছেন।’
উল্লেখ্য গত রোববার বেলা দেড়টার দিকে ঘটা দুর্ঘটনায় জবি শিক্ষার্থী রুবিনার দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে রেলওয়ে পুলিশ। রেলওয়ে পুলিশ জানায়, বেলা দেড়টার দিকে মেয়েটি চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে রেললাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাচ্ছিলেন মেয়েটি । এ সময় একটি ইঞ্জিন ঘোরানো হচ্ছিল। মেয়েটি এর নিচে পড়ে যান, এতে তার দুটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
উল্লেখ্য আজকের এক মিটিংয়ে শিক্ষার্থী রুবিনার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহন করে জবি পরিবার।
১. বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ তার থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব বহন করবে
২. একাডেমিক কার্যক্রমের যাবতীয় খরচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মওকুফ করে আনা হবে।
৩. তার নামে ব্যাংক একাউন্ট ও বিকাশ একাউন্ট খুলে তহবিল সংগ্রহ করা হবে।
৪.চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহন করা হবে।
৫.সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তার জন্য ভাতার ব্যবস্থার চেষ্টা করা হবে।
৬.হাসপাতাল ত্যাগ করার পর কৃত্রিম পা সংযোজন সহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহন করা যাতে সে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারে।
৭.প্রাপ্ত তহবিল দিয়ে তার নামে ব্যাংক ডিপোজিট অথবা সঞ্চয়পত্র কেনা
৮. তার ছোট ভাইয়ের জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি মওকুফ করার চেষ্টা করা হবে।
৯. শিক্ষক সমিতির কাছে থেকে সাহায্য চাওয়া
১০. সর্বোপরি ভিসি স্যারের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পরবর্তিতে উপযুক্ত সম্মানজনক কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করা।
এইসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে আন্তরিকভাবে পাশে থাকার অনুরোধ জানায় শিক্ষকগন।
