নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশ দম্পতি মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে হাইকোর্টের দেয়া যাবজ্জীবন দণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলে ঐশীর মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হয়েছে। সোমবার আপিল দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সুফিয়া খাতুন।
এর আগে গত বছরের ৫ জুন ঐশী রহমানের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজার দণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।
রায়ের আগে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও নিজামুল হক নিজাম।
অপরদিকে আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি। এরপর গত ৭ মে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মামলাটি গত ৫ জুন রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়।
এর আগে পুলিশ দম্পতি হত্যা মামলায় তাদের একমাত্র মেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমানের মামলাটি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে, ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ঐশী। পরে ১২ মার্চ এই মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রাখেন আদালত। পরে ৫ জুন রায় ঘোষণা করেন আদালত। গত ২২ অক্টোবর এই মামলায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজ বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মা-বাবা খুন হওয়ার পর পালিয়ে যান ঐশী। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ১৭ আগস্ট ঐশী রহমান রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করে। এরপর ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় ঐশী।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের মাতুব্বর ঐশীকে প্রধান করে তিনজনের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধান আসামি ঐশী রহমানকে ডাবল মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন আদালত। অপর দুই আসামি ঐশীর বন্ধু রনিকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও জনিকে খালাস দেয়া হয়।