নিজস্ব প্রতিবেদক: গণমাধ্যমগুলোতেও নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে নারীরা কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু সেখানেও তারা বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।’
সোমবার দুপুরে ন্যাশনাল হাইওয়েজ ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এনএইচডিপি) আয়োজিত ‘নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে গণমাধ্যম ও আমাদের দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘প্রতিটি মিডিয়া হাউজে অভিযোগ বক্স স্থাপনের কথা বলেছি। সেখানে কর্মরত নারীরা অভিযোগ করবেন। আর সেই অভিযোগগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু আজ পযর্ন্ত কোনও অফিসে তা স্থাপন করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত কর্মক্ষেত্র, গৃহ ও চলার পথে নারীরা নির্যাতনের শিকার হন। নির্যাতনের শিকার হলেও অনেকে লিখিত অভিযোগ করেন না।’
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক শ্যামল দত্ত বলেন, ‘এমন কোনও নারী নেই যিনি নির্যাতনের শিকার হননি। আবার আজ যারা নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন তাদের দ্বারাও যে কেউ নির্যাতনের শিকার হননি সেটা বলা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিটা কী সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন পরিবারের প্রধান হন পুরুষ। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীর অধিকার সীমিত। নারীর কতখানি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে? পরিবারে নারীর অধিকার সীমিত করে রাখা হয়েছে।’
শ্যামল দত্ত বলেন, ‘আজ কানাডায় কোনও শিশু কান্না করলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ চলে আসে। কিন্তু আমাদের দেশে নারীরা কান্না করলেও পুলিশ আসে না।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই নারীর প্রতি বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার চিত্র তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে নারীরা কিভাবে সহযোগিতা পেতে পারেন সে বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নারীর জীবনচক্রের প্রতিটি ধাপে জড়িয়ে আছে জেন্ডার বৈষম্যের প্রভাব। আর এই বৈষম্য থেকেই সৃষ্টি হয় জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা। নারীর প্রতি সহিংসতা সংঘটনের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বর্তমানে দেশে ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ বিবাহিত নারী আপন ঘরেই স্বামীর দ্বারা জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার হন। এক্ষেত্রে ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ শারীরিক নির্যতন, ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ যৌন নির্যাতন, ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানসিক নির্যাতন এবং ১১ দশমিক ৪ শতাংশ আর্থিক নির্যাতনের শিকার হন।