নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যবসায়ী, বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ মানুষের মতামত উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই গ্রাহকদের নতুন মূল্যহারে বিদ্যুতের বিল দিতে হবে। গ্রাহক শ্রেণি নির্বিশেষে প্রতি ইউনিট (এক কিলোওয়াট ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম বেড়েছে গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়।
বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেন, বিদ্যুত বিতরণের খরচ বাড়ায় বিদ্যুতের খুচরা পর্যায়ে মূল্য বাড়ানোর সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিট (এক কিলোওয়াট ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এ বিল ডিসেম্বর মাস থেকে কার্যকর হবে। তবে বিদ্যুতের পাইকারি (বাল্ক) দাম বাড়ানো হয়নি।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ৫০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের ন্যূনতম চার্জ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বিইআরসির সদস্য মো. মিজানুর রহমান জানান, যদি কোনো গ্রহক বিদ্যুত ব্যবহার না করে তাহলে তাকে ২৫ টাকা বিল দিতে হবে। আগে যেটা ১০০ টাকা দিতে হত। এছাড়াও নির্মাণ কাজে বিদ্যুতের ব্যয় ৫০ শতাংশ কমানো হয়েছে। আর বিদ্যুতের এ দাম বাড়ানোর ফলে সরকারের ১৭শ’ কোটি টাকা আয় বাড়বে বলেও জানান তিনি।
মিজানুর রহমান বলেন, পাইকারি বিদ্যুৎ প্রতি ইউনিট বিক্রির প্রয়োজন পাঁচ টাকা ৪০ পয়সা করে। তার বদলে বর্তমানে গড়ে চার টাকা ৮৪ পয়সায় বিক্রি করায় চলতি অর্থবছরে পিডিবির ভর্তুকি গুনতে হবে ৩৬০০ কোটি টাকা।
বিইআরসির সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খুচরা পর্যায়ে গড়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বাড়ানো হলেও বিদ্যুতের ন্যূনতম চার্জ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ফলে মাসে ৫০ ইউনিটের কম ব্যবহার করেন পিডিবির এমন প্রায় ৩০ লাখ গ্রাহকের (মোট গ্রাহকের ১৩ শতাংশ) বিদ্যুৎ বিল কমবে।
এই দাম বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রায় ৬০ লাখ গ্রাহকের ( মোট গ্রাহকের ৩৮ শতাংশ) মাসিক বিল মোটেও বাড়বে না বলে বিইআরসির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
নতুন হারে আবাসিকে মাসে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়বে ১৫ টাকা, ১৫০ ইউনিটে ৪৮ টাকা, ২৫০ ইউনিট পর্যন্ত ৯০ টাকা, ৪৫০ ইউনিট পর্যন্ত ১৯৬ টাকা এবং ১০০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়বে ৬০৪ টাকা।