নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কিটকট চেয়ারে বসে সমুদ্র উপভোগরত দম্পতিকে নাজেহালের অভিযোগে ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মাসুদকে ক্লোজড করা হয়েছে। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ থেকে প্রত্যাহার করে তাকে ট্যুরিস্ট পুলিশের কেন্দ্রীয় লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করছেন।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগটি তদন্তে দু’সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে রয়েছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে রাব্বী ও সিনিয়ির সহকারী পুলিশ সুপার এইচ এম রায়হান কাজেমী। পর্যটনের স্বার্থে তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন বলে জানিয়েছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এইচ এম রায়হান কাজেমী।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় সৈকতে কিটকট চেয়ারে বসে রাতের সমুদ্র উপভোগ করতে গিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের হাতে স্বস্ত্রীক নাজেহাল হন কক্সবাজার শহরের বিজিবি ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দা এনজিও কর্মকর্তা ও সেনা শাখা বিএনসিসির সাবেক ক্যাডেট এম কায়দে আজম।
বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। আর অভিযোগটি পেয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপিকে নির্দেশনা দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, এম কায়দে আজম সন্ধ্যার পর স্বস্ত্রীক সৈকতে বেড়াতে গিয়ে লাবণী পয়েন্টে চেয়ারে বসেন। রাত ৮টার দিকে ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তা এএসআই মো. মাসুদসহ ৩ কর্মকর্তা এসে তারা স্বামী-স্ত্রী কি-না জানতে চান। হ্যাঁ সূচক উত্তর পাওয়ার পরও এর প্রমাণ দেখাতে বলেন। তা না পারলে পরিবারের লোক এনে পরিচয় নিশ্চিত করতে বলেন। স্থানীয় অধিবাসী এবং এনজিও কর্মকর্তা পরিচয় দেয়ার পর নানা বাকবিতণ্ডায় অশালীন আচরণে অন্যান্য পর্যটকদের সামনে তাদেরকে (স্বামী-স্ত্রীকে) নাজেহাল করা হয়।
ভুক্তভোগী এম কায়দে আজম বলেন, সারাদিন কাজের চাপে থাকতে হয় বিধায় পরিবারকে সময় দিতে পারি না। ডিউটি শেষ করে স্ত্রীকে নিয়ে একটু নিরিবিলি সময় কাটাতে রাতে সৈকতে গিয়ে অন্যদের মতো চেয়ারে বসেছিলাম। কিন্তু পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে থাকা পুলিশের কাছে এভাবে নাজেহাল হতে হবে কল্পনাও করিনি। এএসআই মাসুদের সঙ্গে থাকা অন্যজন বলছিলেন কিছু বিনিময় দিয়ে যেন ভুল বুঝাবুঝিটা মিটিয়ে ফেলি। স্থানীয় হয়ে যদি এমন ভোগান্তিতে পড়ি তাহলে বন্ধু-বান্ধবীকে নিয়ে সৈকতের হাওয়া খেতে আসা পর্যটকদের অবস্থা কি হয় সেটা অনুমেয়। একটি পর্যটন এলাকায় এমনটি হয়ে থাকলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পে।
অভিযুক্ত এএসআই মো. মাসুদ বলেন, রাতের সৈকতে সমুদ্রের হাওয়া খেতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধান করে থাকি আমরা। পাশাপাশি কোনো অনৈতিকতা দেখলে অন্যদের জন্য তাও প্রতিহত করা হয়। অভিযোগকারীদের অনৈতিক অবস্থা দেখার পর তাদের পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছিল। এটাকে আড়াল করে অভিযোগ করা হয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এইচ এম রায়হান কাজেমী বলেন, অভিযোগের কপিটি পেয়ে অভিযুক্ত এএসআই মাসুদকে ক্লোজ করে ঢাকা হেড অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে গঠিত তদন্ত কমিটি বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে মাথায় নিয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার (মাসুদের) বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।