নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষতিপুরণ চেয়ে মানহানির এক মামলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনকে আদালতে জবাব দাখিলে সমন জারি করা হয়েছে। অপরদিকে শাস্তি চেয়ে মানহানির যে মামলা করা হয়েছে তা খারিজ করে দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার পৃথক দুই আদালতে মানহানির দুই মামলা করেন শাহবাগ এলাকার বাসিন্দা মমতাজ ইসলাম। আদালত বাদির জবানবন্দি গ্রহণ শেষে এ আদেশ দেন।
এর মধ্যে ঢাকার চতুর্থ সহকারী জজ দেব দাস চন্দ্রের আদালতে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি মামলা এবং ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল হকের আদালতে শাস্তি চেয়ে মানহানির মামলা করা হয়।
চতুর্থ সহকারী জজ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ২১ জানুয়ারি মেয়র সাঈদ খোকনকে এ বিষয়ে জবাব দাখিলের জন্য সমন জারি করেন। অপরদিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।
বাদীর আইনজীবী একলাস উদ্দিন ভূইয়া বলেন, মামলার বাদী মমতাজ ইসলামের শাহবাগ থানার ৯/৫, সেক্রেটারিয়েট (আনন্দবাজার) একটি জায়গা আছে। ওই জায়গায় আদালতের ‘স্থিতি অবস্থা’র আদেশ থাকা সত্ত্বেও সাঈদ খোকন বাদীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে উচ্ছেদের হুমকিসহ অপমান করেন। এ কারণে তিনি মেয়রের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে দু’টি মামলার আবেদন করেন। চতুর্থ সহকারী জজ মেয়র সাঈদ খোকনকে জবাব দাখিলের জন্য সমন জারি করেন এবং ঢাকা মহানগর আদালত মামলা খারিজ করে দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়- ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর একটি সমন্বয় সভায় মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আনন্দবাজার এলাকার ফুলবাড়ীয়া বাসস্ট্যান্ড হস্তান্তরের জন্য উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আনন্দবাজারে রেলওয়ের জায়গা আছে। এ জায়গায় ফুলবাড়ীয়া বাসস্ট্যান্ড স্থাপনের লক্ষ্যে শিগগিরই উচ্ছেদের অভিযান চালানো হবে। বাদীর এ ধরনের বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।
মেয়রের এ বক্তব্যে বাদীর বিভিন্ন আবাসিক ও দোকানের মালিক এবং কর্মচারীরা ভয়ে ব্যবসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। অনেকেই বাসা ভাড়া ছেড়ে দেয়ার জন্য বাদীকে হুমকি দেয়। বিবাদীর এ বক্তব্যের কারণে বাদীর ৫ কোটি টাকার মানহানি হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, মামলার বাদী মমতাজ ইসলাম শাহবাগ থানার ৯/৫, সেক্রেটারিয়েট (আনন্দবাজার) এলাকায় ৪.১৭ একর জমি মালিক এবং দখল করে আছেন। ২০১১ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশ রেলওয়ে তা উচ্ছেদ করতে চাইলে হাইকোর্ট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন এবং আদালতের আশ্রয় নিতে বলেন। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাদীকে উচ্ছেদ করতে চাইলে আবারও হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। ২০১৩ সালের ৭ জুলাই উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রিট পিটিশনটি কিছু অবজারবেশনসহ নিষ্পত্তি করেন আদালত। রিট পিটিশনের আপিল বিভাগের আদেশ রেলওয়ে এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকে।