ডেস্ক রিপোর্ট: ‘বিএনপিকে নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসতে হবে’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপিকে নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, বরং সব দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে বাধ্য হবে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মন্তব্য করেন ফখরুল।
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে চীনের প্রতিনিধি দলের বৈঠক শুরু হয় বলে জানান চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দীন দিদার। তিনি বলেন, ‘বৈঠকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ও সরকারের সহকারী মন্ত্রী ওয়াং ইয়াজুন প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন।’
বৈঠকে খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া একটি রাজনৈতিক দলের অধিকার। এটি কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নাকে খত দিয়ে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বরঞ্চ বর্তমানে যারা সরকারে আছেন, তাদের বাধ্য হতে হবে সব রাজনৈতিক দল যেন নির্বাচনে আসে, তার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে। এটা শুধু বিএনপির কথা নয়, এটা দেশের জনগণের কথা।’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যে, আজকের (বৃহস্পতিবারের) সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছ থেকে প্রশ্ন এসেছে যে, এটা (নির্বাচন) সবচেয়ে বড় সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সেটা নিরপেক্ষ একটা সরকারের অধীনে নির্বাচন করা- এই প্রশ্নটা জাতির সামনে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।’
ফখরুল যুক্ত করেন, ‘উদ্যত ও দাম্ভিকতা দিয়ে তো ভবিষ্যতে দেশ শাসন চলবে না, দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যাবে না।’
তিনি এও বলেন, ‘যে কথাটা আমরা বার বার বলেছি, আমরা সংঘাত চাই না। আমরা অস্থিতিশীলতা চাই না। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে যাতে সত্যিকার অর্থে ভবিষ্যতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা সম্ভব হয়,গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া সম্ভব হয়, জনগণের অধিকার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটাই আমরা চাচ্ছি। জনগণও সেটা চাচ্ছে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘যদি প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বশীল নেত্রী হন, তাহলে অবশ্যই তাকে এদিকেই চিন্তা করতে হবে এবং জনগণের মনের আশা-আকাঙ্ক্ষাটা বুঝতে হবে। সেভাবেই তাকে কাজ করতে হবে।’
‘বিএনপির সঙ্গে কোনও সংলাপে রাজি নন’- সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন,‘এটা তার (প্রধানমন্ত্রী) দায়। আজকে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং সব দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসা, যিনি সরকারের প্রধান তার দায়।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন করবেন কী করবেন না, নির্বাচন হবে কী হবে না, এটার দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।’
এদিকে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন। চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন।