ঢাকামঙ্গলবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গণতন্ত্রকে বাঁচাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই: ওবায়দুল কাদের

editor
ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ ৭:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজকের প্রভাত রিপোর্ট: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনও বিকল্প নেই। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ। সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্রকে সুস্থ ও সুষ্ঠু করবে।’
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী পর্বে এসব কথা বলেন তিনি।
‘বিরোধী দল নির্বাচনের বাইরে থাকুক, আওয়ামী লীগ কখনোই তা চায়নি’ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেকেই (নির্বাচনে) এসেছেন। কিন্তু বিএনপিসহ যারা আসেননি, তারা আসলে নির্বাচনটা আরও প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ হতো। শক্তিশালী প্রতিদ্ব›িদ্বতা হতো, সেটা আমরা জানি। তারা নেই, তারপরও কিন্তু সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশ।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করেছিল, তারা না থাকলে সারা দেশে লোকজন থাকবে না এবং নির্বাচন উৎসবমুখর হবে না, ভোটার উপস্থিতি শূন্যের কোটায় যাবে। এরকম দুঃস্বপ্ন নিয়ে তারা আন্দোলন করে ব্যর্থ। এখন তারা সরকার কীভাবে ব্যর্থ হবে, ভোটার টার্নওভার কীভাবে কম হবে এবং নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হবে নাÑ বলে নানান গল্প বলে যাচ্ছে।’
‘নির্বাচন হলে দেশে টুকটাক ঘটনা ঘটে’, মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কিছু কিছু সহিংসতাও বেড়েছে। একটা বিষয় দুঃখজনক ও নিন্দনীয় যে, দায়িত্বশীল নেতারা দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা বলেন। এমপি ছিল, মন্ত্রী ছিল; এমন লোকেরা এখনও ধমকের সুরে কথা বলে। এখনও ক্ষমতার দাপট যারা দেখায়, তাদের মুখ বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের উদ্দেশ্যকে আমরা ব্যাহত হতে দিতে পারি না। পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। অসুস্থ পরিবেশ যারাই সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে কোনও হেলাফেলা চলবে না। রোজ পত্রিকা খুললেই দেখি, ধমক দিচ্ছে। সংসদীয় এলাকা কারও বাপ দাদার সম্পত্তি নাকি? এলাকা জনগণের, জনগণকে ভোট দিতে হবে, ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ ব্যাপারে যারা বাধা দেবে তাদের প্রতিহত করতে হবে। ‘
কিছু লোকের কথাবার্তা শুনলে অবাক লাগার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এরা কিসের জনপ্রতিনিধি? যারা বাজে কথা বলে তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের কেউ ভোটের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। যারা নষ্ট করবেন তাদের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিলে আমরা অকুণ্ঠ সমর্থন জানাবো। এখানে কোনও প্রকার আপস করবো না।’
দলীয় পোলিং এজেন্টদের দায়িত্বশীল হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এজেন্টরা অনেক সময় অকাজের হোতা হয়ে যায়। ভেতরে বসে দলের অতি দরদ দেখাতে গিয়ে নির্বাচনের শৃঙ্খলা নষ্ট করে। এমন এজেন্টের দরকার নেই। দলের সুনাম যেন থাকে, এমন এজেন্ট আমাদের দরকার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের নির্বাচনটা আমরা খুব ভালোভাবে করতে চাই। নির্বাচন নিয়ে বদনাম নিতে চাই না। শেখ হাসিনা সত্যিকার অর্থে একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন চান। তার ইচ্ছেকে সার্থক করতে হবে। সে ব্যাপারে পোলিং এজেন্টদের নিষ্ঠার সঙ্গে করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই কঠিন সময় অতিক্রম করছি। সারা বিশ্বই সংকটের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশ্ব সংকটের প্রভব-প্রতিক্রিয়া থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন নয়। আন্তর্জাতিক রাজনীতির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য বন্ধন আছে।’
ইউক্রেন, সুদান ও মাধ্যপ্রাচ্য সংকটের কথা তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে আমরাও সংকটে আছি। দোষটা বড় বড় দেশগুলোর, কিন্তু দায় পড়ছে আমাদের উপর, শাস্তি পাচ্ছি আমরা। দেশে আমাদের গরীব মানুষরা সাফার করছে, প্রান্তিক মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। বাজারে জিনিসপত্রের যে ঊর্ধ্বগতি, সেটা নিয়েও মানুষের দুঃখ-কষ্টের আবহ তৈরি হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আমরা এই দায় এড়াতে পারি না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে, ডলারে সংকট, মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি, পরিবহনে অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে।’
সংকটেও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্বাচন করতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলতে পারেনÑ এ সংকট পার করে নির্বাচন করা উচিত। অবশ্যই উচিত নয়, কারণ আমাদের সংবিধান আছে, সাংবিধানিক নিয়ম আছে। নির্বাচন দিয়েই সংবিধান রক্ষা করতে হবে। নির্বাচন করতে হবে, এর কোনও বিকল্প নেই। নির্বাচন করতে হচ্ছে প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতে।’
বিএনপির নির্বাচন বর্জনের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন বানচাল করতে চায় মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ করে নয়, বানচাল করতে চায় সন্ত্রাস ও সহিংসতার মাধ্যমে। এ সন্ত্রাস-সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।’
পৃথিবীর অনেক দেশের রাজনৈতিক দল নির্বাচন থেকে সরে যায় উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘নির্বাচন বানচাল করার জন্য সহিংসতার প্রস্তুতি বিরল ঘটনা। বাংলাদেশে এটা হচ্ছে। নেতা নেই, রিমোট কন্ট্রোলে লিডারশিপ।’
তারেক রহমানের সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘তিনি এখন রাজনীতি করছেন না, রাজনীতিটাকে ধ্বংস করছেন। দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। তার বাবা জিয়াউর রহমান এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে।’
তত্ত¡াবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সংগ্রামের কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, ‘তত্ত¡াবধায়ক সরকারের জন্য আমরা হরতাল করেছি। কিন্তু বিএনপি তত্ত¡াবধায়ক ব্যবস্থাটাকে ধ্বংস, বিকৃতি ও ব্যবস্থার উপর আঘাত করেছে। সে কারণে এটা আমরা চাই না। তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আমরা বাতিল করিনি, এটা করেছে বিচার বিভাগ। কাজেই এ ব্যবস্থা মরে গেছে, জীবিত করার প্রয়োজন নেই।’

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial